স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে হওয়া মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যের চুক্তি স্বাক্ষর এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর
দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ‘সবচেয়ে খারাপ বিষয় হবে এই মানুষগুলোকে বাংলাদেশের
ক্যাম্প থেকে মিয়ানমারের ক্যাম্পে সরিয়ে নেয়া’। গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার মিয়ানমারের
রাজধানী নেপিদোতে স্বাক্ষরিত ওই চুক্তিতে রোহিঙ্গারা তাদের গ্রামে ফিরতে পারবে
নাকি তাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে সে বিষয়টি স্পষ্ট করা দরকার বলে মনে করেন জাতিসংঘ
মহাসচিব।
এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী
রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোও এক যৌথ বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত সাড়ে ছয়
লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদের ঘরে ফেরার পথ করে দিতে মঙ্গলবার মিয়ানমারের সঙ্গে ওই চুক্তি করে
বাংলাদেশ।
‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ চুক্তিতে দুই বছরের মধ্যে
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরতের কথা বলা হয়েছে। এই চুক্তি হওয়ার দিনই তার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয়
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। রোহিঙ্গা সংগঠনগুলোর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শরণার্থীরা ঘরে ফেরার জন্য কাতর হয়ে আছে।
এতে বলা হয়, মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে
নিরাপদ ও স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ এখনও সৃষ্টি না হওয়ায় তারা
যেতে চান না। আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারী
সারা বিশ্বের রোহিঙ্গা সংগঠনগুলো গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পালিয়ে
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ছয় লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের
মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রোহিঙ্গাদের প্রতি মিয়ানমার
সরকার এবং দেশটির সেনাবাহিনীর আচরণে এখনও কোনো পরিবর্তন আসেনি। বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সংগঠনগুলো হল- আরাকান রোহিঙ্গা
ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (এআরএনও), বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকে (বিআরওইউকে), ব্রিটিশ রোহিঙ্গা কমিউনিটি
ইন ইউকে, বার্মিজ রোহিঙ্গা কমিউনিটি ইন ডেনমার্ক, বার্মিজ রোহিঙ্গা অ্যাসোসিয়েশন জাপান (বিআরএজে), রোহিঙ্গা অ্যাডভোকেসি
নেটওয়ার্ক ইন জাপান, বার্মিজ রোহিঙ্গা কমিউনিটি অস্ট্রেলিয়া (বিআরসিএ), বার্মিজ রোহিঙ্গা
অ্যাসোসিয়েশন ইন কুইন্সল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া (বিআরএকিউএ), কানাডিয়ান বার্মিজ রোহিঙ্গা
অর্গানাইজেশন, ইউরোপিয়ান রোহিঙ্গা কাউন্সিল (ইআরসি), মিয়ানমার এথনিক রোহিঙ্গা হিউম্যান রাইটস
অর্গানাইজেশন ইন মালয়েশিয়া (এমইআরএইচআরওএম), রোহিঙ্গা আমেরিকান সোসাইটি, রোহিঙ্গা আরাকানিজ রিফুজি
কমিটি, রোহিঙ্গা কমিউনিটি ইন জার্মানি,
রোহিঙ্গা কমিউনিটি ইন সুইজারল্যান্ড, রোহিঙ্গা কমিউনিটি ইন
ফিনল্যান্ড, রোহিঙ্গা কমিউনিটি ইন ইতালি,
রোহিঙ্গা কমিউনিটি ইন সুইডেন, রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন
নরওয়ে, রোহিঙ্গা সোসাইটি মালয়েশিয়া (আরএসএম) এবং রোহিঙ্গা সোসাইটি নেদারল্যান্ডস।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: