22 April 2018

লাশ হলেও ফেরত চান স্বজনরা


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের কোনো সন্ধান পাচ্ছেন না তাদের স্বজনরা তারা বেঁচে আছেন না মরে গেছেন, কিছুই জানেন না তারাসরকারের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করা হচ্ছে নাএমতাবস্থায় তাদের লাশ হলেও ফেরত চান স্বজনরা

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গুম হওয়াদের পরিবারের সদস্যদের সংগঠন মায়ের ডাকআয়োজিত গণশুনানিতে অংশ নিয়ে স্বজনরা এসব কথা বলেনএতে ৫০টি পরিবার অংশ নেয়

পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা আজও স্বজনের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেনকিন্তু তাদের ফিরে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন নাঅন্যদিকে এই গুমের পেছনে কারা দায়ী, সেটাও চিহ্নিত করছে না সরকারএসব ঘটনার কোনো বিচার হবে কিনা, প্রশ্ন রাখেন তারা

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তারা এ পর্যন্ত ২৫ বার সংবাদ সম্মেলন করেছেনএ সময় স্বজনরা প্রশ্ন রাখেন- আর কতদিন আমরা অপেক্ষা করব? কেউ যদি মৃত্যুবরণ করে থাকে অন্তত তার লাশটি আমরা ফেরত চাই

গুম হওয়া ছাত্রদল নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা বলেন, ‘আমার ভাইকে র‌্যাব-১ এর গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়কোনো সংস্থা দেশের কোনো নাগরিককে এভাবে গুম করতে পারে নাগুম করার পর তাদের কী রকম টর্চার সেলে রাখা হয় আমি জানি নাসে বেঁচে আছে নাকি তাও জানি নাআমার ভাইয়ের দোষ সে বিএনপি করতপুলিশ আমাদের কোনো মামলা নেয়নিকোর্টে রিট করেছি, কোনো অগ্রগতি নেইযতক্ষণ তারা ফিরে না আসে আমরা রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাব

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. শাহিনুর আলমকে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ তার পরিবারেরতারা প্রথমে নবীনগর থানায় খোঁজ নেন, কিন্তু সেখানে তাকে পাওয়া যায়নিসাতদিন পর তারা শাহিনুরের লাশ পানপরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন- যার নামে কোনো মামলা নেই, কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই তাকে কেন হত্যা করা হল?
শাহিনুর আলমের ছোট ভাই মেহেদি হাসান বলেন, পরে আমরা বিচারের আশায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা করিম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহার মামলা আমলে নেনকিন্তু সেই মামলা এখনও ঝুলে আছেকোনো শুনানি হয়নি

চট্টগ্রামে গুম হওয়া নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী বলেন, তার চোখের সামনেই পুলিশ পরিচয়ে তার স্বামীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছেবাসায় এসে কলিংবেল চেপে পুলিশ পরিচয় দেয়ায় তিনি গেট খুলে দেন। খালি গায়েই তার স্বামীকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায় তারাতিনি বলেন, আমাদের আশা ছিল নিয়ে গেছে যখন কোর্ট থেকে জামিনের আবেদন করব

কিন্তু তার আগেই ভোর ৪টায় খবর আসে তার লাশ পাওয়া গেছে কর্ণফুলী নদীর পাড়েআমরা সকাল ৭টায় সেখানে পৌঁছিতার মাথায় দুটি গুলি করা হয়েছেতিন মাসের বাচ্চা রেখে গেছে সেসেই বাচ্চা বড় হয়ে গেছে এখন

বাবা বলে কিছু নাই তারএদিকে ভাইয়ের আশায় এখনও পথ চেয়ে আছেন রেহানা আজাদ মুন্নিতার ভাই পিন্টুকে সাদা পোশাকধারীরা নিয়ে যায় পরে কোথাও তার সন্ধান পাওয়া যায়নিতিনি বলেন, একটা লোক হারিয়ে যাবে তার দায় কী সরকারের নেই? কার কাছে বিচার দেব? ছেলের আশায় থেকে আমার মা পাগল হয়ে গেছেনযখনই বাসায় কোনো ফোন আসে আমার কাছে তখনই আঁতকে উঠিআমি ভয়ে থাকি সব সময়এভাবে কি বাঁচা যায়?


শেয়ার করুন

0 facebook: