06 August 2019

হিন্দু দারোগা ও ওসি মিলে মাদ্রাসা ছাত্রের মা-কে রাতভর ধর্ষণ, বাঁচতে মিথ্যা মাদক মামলা


স্টাফ রিপোর্টার।। তিন সন্তানের জননী (৩০) নিজের সম্ভ্রম রক্ষার জন্য আকুতি-মিনতি করেও হৃদয় গলাতে পারেনিস্যার আমার ছেলে মাদরাসায় পড়েআমাকে এভাবে শেষ করে দিবেন নাএ সময় ওসি অট্রহাসি দিয়ে বলে-তোর এখনও ভরা যৌবন, এ দিয়েই তো চলে’-এই বলে সে আমাকে বিবস্ত্র করে ফেলে তার রুমের মধ্যে ধর্ষণ করেসে চলে যাবার পরে থানার গৌতম দারোগাসহ চারজন পুলিশ রাতভর আমার উপর নির্যাতন চালায়

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে সেই রাতে খুলনা রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ওসি ওসমান গনি পাঠানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের ধর্ষণের বর্ণনা দিতে দিতে হাউমাউ করে কেদে ওঠেন এবং মূর্ছা যানএ সময় তার দূরে ধর্ষিতার সাত ও আড়াই বছরের দুটি কন্যা সন্তান নিয়ে তার বৃদ্ধা মা আম্বিয়া বেগম দাঁড়িয়েছিল

এর আগে, ৪ আগস্ট রোববার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খুলনার আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জিআরপি থানার ওসির রুমে রেখে রাতভর ধর্ষণের ঘটনাও বর্ণনা দেন ওই নারী

আদালতের নির্দেশে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য রোববার রাতে ওই নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়কিন্তু সময়স্বল্পতার কারণে পরীক্ষা হয়নিসোমবার তাকে আবারো হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়বিকেলে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়

এদিকে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওসি ওসমান গনি মোটা অংকের টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেনকিন্তু সমঝোতায় রাজি না হওয়ায় তিনি হুমকি দিচ্ছেন বলেও ওই গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন

এ ঘটনাটির তদন্তের জন্য কুস্টিয়া রেলওয়ের সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদকে সভাপতি ও ডিআইও-১ এর পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) স ম কামাল হোসেন এবং দর্শনা রেলওয়ের ইমিগ্রেশন ক্যাম্পের অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ বাহারুল ইসলামকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছেতাদেরকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে

ধর্ষিতা গৃহবধুর খালাতো ভাই শাহাবুদ্দিন মাতব্বর জানান, গত শুক্রবার তার বোন (৩০) যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসেনএদিন রাত সাড়ে সাতটার দিকে খুলনা রেলস্টেশনে কর্তব্যরত জিআরপি পুলিশের সদস্যরা তাকে সন্দেহ করে ধরে নিয়ে যায়পরে গভীর রাতে জিআরপি পুলিশের ওসি ওসমান গণি পাঠান তাকে ধর্ষণ করেএরপর আরও চার পুলিশ কর্মকর্তা (সদস্য) তাকে ধর্ষণ করে

পরদিন শনিবার ওই নারীকে ৫ বোতল ফেনসিডিলসহ মাদক মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়আদালতে বিচারকের সামনে নেওয়ার পর ওই নারী জিআরপি থানায় তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা তুলে ধরেনএরপর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খুলনার আদালতে ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন

ফেনসিডিল দিয়ে ফাঁসানো ও জিআরপি পুলিশের চাঁদা দাবি প্রসঙ্গে গৃহবধূর ভাই মুহম্মদ সেলিম হাওলাদার জানান, আমাকে পুলিশ বলে, তোমার বোনকে মোবাইল চুরির জন্য ধরে নিয়ে আসছিআমি বলেছি, স্যার আমার বোনতো এসব করে নাপুলিশ বলে, এই তুমি বেশি জানো? এই একে ধরোবোনের সঙ্গে ভাইরেও লকআপে ভরোআমি বলি স্যার কি বলছেন? তিনি বলে, এই বেশি কথা বলবি নাযা বাসা থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে আয়আমি বলি, আমরা গরিব মানুষ টাকা পাব কই? তিনি বলেন, টাকা পাবি কই আমি জানি নাতুই টাকা নিয়ে আয়তা না হলে ওরে ছাড়ব না

এরপর রাত ১০টা পর্যন্ত আমি ওইখানে বসে থাকিআমাকে অনেক ভয়-ভীতি দেখাইছেফেনসি দিমু নয় বাবা দিয়া চালান দিয়া দিমুযাও বাসায় যাও, ভালো লোক হয়ে থাকলে বাসায় যাওআমি ভয়ে চলে আসছিচলে আসার পর ভোর ৬টায় গেছিযাওয়ার পরে বলে, এদিকে এসো, টাকা আনছো? আমি বলি স্যার আমরা গরিব মানুষ, আমাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নাঠিক আছে এখন ৭ বছর জেল খাটলে.. এরপর আমাকে বলে এই ভোটার আইডি কার্ড ফটোকপি করে আনোআমি আনছি, আনার পরে এবার আমার ছোট বোনকে বের করেছে

আমাকে ফটোকপি আনতে দিয়ে ফেনসিডিল দিয়ে ওরে বের করছেআমি বলি স্যার এই আনছিএরপর আমার বোন আমারে জড়িয়ে ধরে বলে, ভাইয়া আমারে পাঁচটি ফেনসিডিল দিয়েছে ব্যাগেআমি বলি আমাকে ফটোকপি আনতে দিলেন, এখন পাঁচটি ফেনসিডিল দিয়ে চালান দিলেনএরপর পুলিশ বলে, ‘এই বেডা বেশি কথা কবি নাআমি তখন একা ছিলামভয়ে আমি আর তখন কিছু বলিনি


শেয়ার করুন

0 facebook: