10 July 2019

কলরবের শিল্পী শামিমের জিনা ব্যভিচারের ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল


স্টাফ রিপোর্টার॥ জাতীয় শিশুকিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের খ্যাতি এখন দেশজুড়ে। ইসলামের নাম ভাঙিয়ে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের বাহবা কুড়িয়ে কলরবের শিল্পীরা তারকাখ্যাতিতে ভূষিত। কিন্তু পাগড়ি-জুব্বা পরা 'ফেরেশতা'র মতো চেহারাধারী এসব শিল্পীর পেছনের গল্প জানেন না সরলপ্রাণ শ্রোতারা। জানেন না কতটা অন্ধকারে বসবাস এসব শিল্পীর।

সুরের মোহ এবং জামা-পোষাকের বাহারি স্টাইল দিয়ে সরলমনা মেয়েদেরকে প্রথমে নিজেদের বাগে আনেন, তারপর পার্কে ঘোরাঘুরি করেন, প্রাইভেট কারে লংড্রাইভের পর হোটেলে ফূর্তি করেন, অতঃপর মেয়েটিকে ছুড়ে ফেলে নতুন মেয়ের সন্ধানে নামেন এমন অভিযোগ পরিচিত ঘরানায় বেশ পুরানো। কিন্তু দেশের আপামর জনতা জানেন না 'ফেরেশতা সুরতে'র শিল্পীদের অন্ধকারের এসব গল্প।

কলরবের সিনিয়র শিল্পী আবু রায়হান থেকে নিয়ে আরও যারা আছেন, তাদের অনেকেরই নারীবিষয়ক আপত্তিকর বেশ কিছু ঘটনা পরিচিত মহলের কারও অজানা নেই। বছর দুয়েক আগে এক মেয়ের সঙ্গে আবু রায়হানের সেক্স বিষয়ক নোংরা ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল। তারপর থেকে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত এই শিল্পীর নামের আগে 'বেগুন' লকব জুটেছে। কলরবের দুইটি পার্ট, আবু রায়হান যে পার্টের সঙ্গে যুক্ত, নোংরা ওই ফোনালাপ প্রকাশের পর আবু রায়হানের বদৌলতে কলরবের এই পার্টকে রসিক সমালোচকরা 'বেগুন কলরব' নামেই ডাকেন।

আবু রায়হানের মতো এবার আবারও ফাঁস হলো তাঁর জুনিয়র এক শিল্পীর নারীবিষয়ক নোংরামি। তবে এবারেরটা কান দিয়ে শুনতে হবে না, চোখ দিয়েই মালুম করা যাবে। Abdullah Al Mamun নামের একটা ফেসবুক আইডি থেকে শনিবার সকালের দিকে এ নোংরামি প্রকাশ করা হয়। প্রকাশকৃত দুইটা স্থিরচিত্রে দেখা যায় কলরবের জুনিয়র শিল্পী শামিম আহমেদ ব্রা পরা একটা মেয়ের সঙ্গে নষ্টামিতে লিপ্ত। ভদ্র ও রুচিবান যেকোনো মানুষই ছবি দুটো দেখামাত্র ঘিনঘিন করে উঠবেন। দেখলেই বোঝা যায়, যৌনমিলন-পূর্ব মুহূর্তে তিনি অথবা তাঁর সেই অবৈধ সয্যাসঙ্গিনী ছবিগুলো তুলেছেন নিজেদের গোপন এ অভিসারকে স্মরণীয় করে রাখবার জন্য। কিন্তু এ স্মৃতিই যে শামিমের জন্য কিছুদিনের ভেতর কাল হয়ে দাঁড়াবে, প্রকাশ করে দেবে তাঁর অন্ধকারের জগতকে, তা হয়তো শামিম কল্পনাও করেননি।

ছবি দুটো প্রকাশের কয়েক ঘণ্টার মাথায় আবদুল্লাহ আল মামুনের আইডিটি গায়েব হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে কলরবের শিল্পীরা নিজেদের 'মান' বাঁচাতে রিপোর্ট মেরে আইডিটি নষ্ট করে ফেলেছেন।

শামিম আহমেদ সদ্য কৈশোর পেরোনো ১৯/২০ বছরের তরুণ। এখনও অবিবাহিত। কলরবে যোগদান করেছেন পাঁচ বছর হলো। বাড়ি শেরপুর জেলায়। রাজধানীর মিরপুরে দারুল উলুম নামে একটি মাদরাসায় নামকাওয়াস্তে পড়াশোনার পাশাপাশি কলরবের নিয়মিত শিল্পী। কলরবে তাঁর পাঁচ বছরের ক্যারিয়ার মোটামুটি একটা যশখ্যাতি এনে দিয়েছে তাঁকে। সেই খ্যাতির সুবাদেই মেয়ে নিয়ে তিনি হোটেলযাপন করেন। এবং এটা তিনি কলরবের উত্তরাধিকার সূত্রেই পেয়েছেন। সিনিয়র শিল্পীদের কাছ থেকে গান শেখার পাশাপাশি শিখে নিয়েছেন 'হোটেলযাপনের বিদ্যা'ও।

কে কাকে নিয়ে হোটেলযাপন করল, সেটা নিয়ে মাথাব্যথার কোনো মানে হয় না, কথা সত্য। কিন্তু ইসলামের নাম ভাঙিয়ে কেউ বা কোনো গোষ্ঠী যখন তারকাখ্যাতি অর্জন করবে, নিজেদেরকে ইসলামের 'রিপ্রেজেন্টার' হিসেবে সমাজে হাজির করবে, গানে গানে মানুষকে জ্ঞান দেবে শুদ্ধতার, আহ্বান করবে আলোর পথে, আবার সেই গোষ্ঠীর লোকেরাই নিজেদের ব্যক্তিজীবনে অশুদ্ধতা, অন্ধকার আর নোংরামির চর্চা করবে, তখন একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের কথা বলার অধিকার এখানে অবশ্যই আছে।

আমাদের মনে তখন অবশ্যই প্রশ্ন জাগবে, সুষ্ঠু পরিচালনা আর নিষ্ঠাবান ব্যক্তিত্বের অভিভাবকত্ব থেকে দূরে থাকা কলরব কোন পথে হাঁটছে? গানের ভেতর শরয়িভাবে আপত্তিকর বিষয়বস্তু, ব্যক্তিগত দুর্নীতি আর অহংকারের অভিযোগ এক পাশে রাখলেও কলরবশিল্পীদের চারিত্রিক এই অবক্ষয় আর অব্যাহত নোংরামি এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ আছে কারও? কলরব আর কলরবশিল্পীদের নিয়ে নতুন করে ভাববার সময় কি এখনো আসেনি?

সূত্রঃ টাইম টিউন।


শেয়ার করুন

0 facebook: