স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের
আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরৎ নেওয়া
বিষয়ে মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি দেশটির স্রেফ প্রচারণা বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
সংস্থাটি
প্রমাণ পেয়েছে, অক্টোবর
ও নভেম্বর মাসে আরো ৪০টি গ্রামের ভবনসহ বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। ২৫ আগষ্টের পর রাখাইনে এ নিয়ে ৩৫৪টি
গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে করে দেয়া হয়েছে।
গত ২৩
নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরৎ নেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকে সই করে মিয়ানমার। কিন্তু এরপরও রাখাইনের অনেক
ঘরবাড়ি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ২ ডিসেম্বর সেখানকার স্যাটেলাইটের
মাধ্যমে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এমনটাই জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
হিউম্যান
রাইটস ওয়াচ বলছে, স্যাটেলাইট
ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে,
এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে, যখন রোহিঙ্গাদের
ফেরৎ নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে
একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার। ২৩ নভেম্বর ওই সমঝোতা হয়।
কিন্তু
২৫ নভেম্বর রাখাইনের মংডুর কাছে মিয়াও মি চ্যাঙ গ্রামে আগুন আর ঘরবাড়ি ধ্বংসের ছবি
তুলেছে স্যাটেলাইট। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
সংস্থাটির
এশিয়ার বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলছেন, ''সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরের সময়েও রাখাইন
গ্রামে বার্মার সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো থেকে এটাই প্রমাণ হয়, রোহিঙ্গাদের
ফেরৎ নেয়ার এই প্রতিশ্রুতি
স্রেফ একটি প্রচারণা। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধ্বংসের যেসব অভিযোগ বার্মার সেনাবাহিনী অস্বীকার
করে আসছে, সেটাই
প্রমাণ করে দিচ্ছে এসব স্যাটেলাইট ছবি।''
মিয়ানমারের
মংডু, বুথিডাং
আর রাথিডাং শহরে আশেপাশের ১০০০ গ্রামের উপর স্যাটেলাইটের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করেছে এসব
তথ্য পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ বছর আগষ্ট মাসের শেষের দিকে রাখাইনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এসব গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ
শুরু হয়।
সম্পূর্ণ
বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫৪টি গ্রামের মধ্যে অন্তত ১১৮টি গ্রামে হামলা হয়েছে ৫ই সেপ্টেম্বরের
পর, যখন
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের অফিস থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, রাখাইনে
অভিযানের সমাপ্তি হয়েছে।
হিউম্যান
রাইটস ওয়াচ বলছে, অগাস্ট
থেকে রাখাইনে শুরু করা এই অভিযানের সময় বার্মার সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, গ্রেফতার
আর ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড চালিয়েছে। জাতিগত নির্মূলের এই অভিযান মানবতাবিরোধী অপরাধের
সঙ্গেই সমতুল্য বলে সংস্থাটি দেখতে পেয়েছে।
গত ১৪
ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে বেসরকারি দাতব্য প্রতিষ্ঠান মেদসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ে (এমএসএফ) বলছে, মিয়ানমারে
আগস্টে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর এক মাসে অন্তত ৬ হাজার ৭'শ রোহিঙ্গা
হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬ হাজার ৭'শ মৃত্যুর কারণ সহিংসতা, যার মধ্যে
পাঁচ অথবা তার চেয়ে কম বয়সের শিশু ছিল ৭৩০ জন।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: