19 January 2018

ধরলেই খরচ ১০ গুন, কড়া হুঙ্কার মেয়র আরিফের

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ সিলেট সিটি করপোরেশন(সিসিক) নির্বাচনের আগে নগরীকে জলাবদ্ধমুক্ত করতে ছড়া-খাল দখলমুক্তকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আরিফুল হক চৌধুরীতাঁর প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রেখে ভোট দিয়েছিলেন নগরবাসীমেয়রের চেয়ারে বসে ছড়া-খাল দখলমুক্ত করতে অভিযানও শুরু করেছিলেন আরিফকিন্তু কিবরিয়া হত্যা মামলায় তিনি প্রায় দুই বছর কারান্তরীণ থাকায় থমকে গিয়েছিল সে অভিযানতবে এ সময়ের মধ্যে নগরীর ছড়া-খাল রক্ষায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয় একনেকে

গেল বছরের জানুয়ারিতে আরিফ কারামুক্ত হওয়ার পর ছড়া-খাল উদ্ধার বা দখলমুক্তকরণের দিকে তেমন মনোযোগ দেননিতবে সিটি নির্বাচনের কয়েক মাস আগে ছড়া-খাল দখলমুক্ত করতে এবার জোরেশোরে মাঠে নেমেছেন তিনি, দিয়েছেন হুঁশিয়ারিও

সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে বা যারা নগরীর ছড়া-খাল দখল করে রেখেছেন, ছড়া-খালের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন, তাদেরকে এসব স্থাপনা ভেঙে ফেলতে হবে

আরিফ বলছেন, ‘ছড়া-খালের মধ্যে নির্মিত স্থাপনা যদি দখলদাররা স্বেচ্ছায় সরিয়ে নেন, তবে তাদেরকে বাড়তি ব্যয় বইতে হবে নাস্থাপনা ভাঙতে নিতে যা ব্যয় হয়, তা-ই বহন করতে হবেকিন্তু কেউ যদি স্বেচ্ছায় অবৈধ স্থাপনা না ভাঙেন, তবে সিটি করপোরেশন নিজ উদ্যোগে সেগুলো ভাঙবেএক্ষেত্রে দখলদারকে নিজে ভাঙলে যে খরচ করতে হতো, তার ১০ গুণ বেশি খরচ বহন করতে হবে

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিলেট নগরীর ছড়া-খাল উদ্ধারে ২০০৯ সালে ১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছিল সিসিকপরবর্তীতে ২০১৩ সালে ২০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়কিন্তু এ উভয় প্রকল্পেই উপকার হয়নি তেমনসর্বশেষ ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নগরীর ছড়া ও খাল উদ্ধারের জন্য ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেয় একনেকএর মধ্যে সরকার থেকে বরাদ্দ ২০০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং বাকি ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা সিসিকের নিজস্ব তহবিলেরসম্প্রতি এ প্রকল্পের জন্য দুটি দরপত্র আহ্বান করে সিসিকএর একটি ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ছড়া-খাল খনন, অপরটি ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে ছড়া-খালে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণআগামী বছরের শেষ সময় পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে

এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে সিলেট নগরীর মালনী ছড়া, গোয়ালী ছড়া, গাভীয়ার খাল, মুগনী ছড়া, কালীবাড়ী ছড়া, হলদি ছড়া, যুগনী ছড়া, ধোপা ছড়া, বুবি ছড়া, বাবু ছড়া, রত্নার খাল, জৈন্তার খাল ও বসুর খালএসব ছড়া ও খালে ২৬ দশমিক ৯৬ কিলোমিটার আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল, পাঁচ কিলোমিটার ইউটাইপ ড্রেন ও সাড়ে তিন কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ এবং ১০ কিলোমিটার ছড়া ও খাল খনন করা হবে

সিসিকের প্রকৌশল শাখার তথ্যানুসারে, নগরীর ১৩টি ছড়া ও খাল দখল করে এক হাজারেরও বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছেএসব স্থাপনার মধ্যে রয়েছে বাসা-বাড়ি, বহুতল ভবন, কমিউনিটি সেন্টার, ক্লিনিক, বিপণিবিতান প্রভৃতিখোদ সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের গ্যালারির কিছু অংশ নির্মাণ করা হয়েছে ছড়ার ওপর!

মেয়র আরিফ বলছেন, নগরীর ছড়া ও খাল দখলমুক্ত করা হবেএজন্য এগুলোর প্রকৃত গতিপথ নির্ণয় করা প্রয়োজন

তিনি বলেন, ‘‘অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ছড়া ও খালের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছেআমরা ছড়া ও খালের গতিপথ নির্ণয় করবএজন্য মালিকপক্ষের একজন ও সিটি করপোরেশনের একজন রেখে ছাপ্পান্নর সেটেলম্যান্ট ম্যাপ অনুসারে যৌথ জরিপ করা হবেছড়ার উৎপত্তিস্থল থেকে নদীমুখ পর্যন্ত কাজ হবে২৩৬ কোটি টাকার যে প্রকল্প, তার আওতায় কাজ চলবে’’

মেয়র জানান, ছড়া ও খাল দখল করে নির্মিত স্থাপনার মালিকপক্ষকে সেগুলো ভাঙতে প্রথমে নোটিশ দেয়া হবেতারা সেটি না করলে সিসিক ভাঙার পদক্ষেপ নেবেতবে সিসিক ভাঙলে ১০ গুণ বেশি খরচ দিতে হবে


শেয়ার করুন

0 facebook: