24 December 2017

হাদীস শরীফকে অশ্লীল বলে খবর ছাপানোয় ভোরের কাগজের সম্পাদক ও প্রতিবেদককে লিগ্যাল নোটিশ!


স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ২০ ডিসেম্বর, বুধবার দৈনিক ভোরের কাগজের ১ম পৃষ্ঠায় অভিজিৎ ভট্টাচার্য নামের এক সাংবাদিক মাদ্রাসার বইয়ে অশ্লীলতানামের একটি প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। এই মাদরাসার বইয়ে অশ্লীলতা শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করায় মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে, যার পরিপ্রেক্ষিতে দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক ও প্রতিবেদককে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন রাজারবাগ দরবার শরীফ থেকে প্রকাশিত দৈনিক আল ইহসান পত্রিকার সম্পাদক।

নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদনের জন্য ভুল স্বীকার এবং ভবিষ্যতে এমন ভুল হবে না মর্মে পুনরায় প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

শনিবার ডাক রেজিস্ট্রিযোগে দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও প্রতিবেদক অভিজিৎ ভট্টাচার্য্যকে এ নোটিশ পাঠিয়েছেন দৈনিক আল ইহসানের সম্পাদক আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম আরিফ।

দৈনিক আল ইহসানের সম্পাদকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল হালিম নোটিশ পাঠিয়েছেন। দৈনিক আল ইহসানের সম্পাদক স্বদেশ বার্তাকে নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নোটিশে বলা হয়- গত ২০ ডিসেম্বর দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার শিরোনামে মাদরাসার বইয়ে অশ্লীলতাশীর্ষক প্রতিবেদন ছাপানো হয়। উক্ত প্রতিবেদনের শুরুতে একটি হাদিস উল্লেখ করা হয় এবং উক্ত হাদিস শরীফকে অশ্লীল, অযৌক্তিক, দ্বীন ইসলাম অবমাননাকর, ব্যঙ্গাত্মক, রসাত্মক মনগড়া বলে উল্লেখ করা হয়। যাহা সুস্পষ্ঠভাবে পবিত্র হাদিস শরীফকে হেয় করা অর্থাৎ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের দ্বীনি অনুভুতিতে আঘাত হানার নামান্তর।

নোটিশে আরও বলা হয়, উক্ত প্রতিবেদনের শিরোনামের মাধ্যমে মাদরাসার পাঠ্যক্রমের সকল বইকেই অশ্লীল হিসেবে কুট কৌশলে বুঝানো হয়েছে। যার মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাধারণ মানুষের কাছে নেতিবাচক করে উপস্থাপন করা হয়। এটাও সুস্পষ্ঠ যে, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দ্বীন ইসলামকে কটাক্ষ ও অবমাননা করার লক্ষ্যেই উক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। যাহা দেশের প্রচলিত আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।

নোটিশে বলা হয়, যেহেতু প্রতিবেদক এবং সম্পাদক উভয়ই অমুসলিম, সেহেতু পবিত্র হাদিস শরীফকে হেয় করে এমন প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে দ্বীন ইসলামের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।

পাশাপাশি প্রতিবেদনের মাধ্যমে মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শ্রেণি বিদ্বেষ সৃষ্টিরও চেষ্টা করা হয়েছে। যাহা দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।

উল্লেখ্য, বিনামূল্যের পাঠ্যবই হিসেবে ছাপানো মাদরাসার নবম-দশম শ্রেণির আল হাদিস বইয়ের ৫৩ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে, ‘একদা এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কি আমার মায়ের কাছে প্রবেশ করতে অনুমতি প্রার্থনা করব? তিনি বললেন হ্যাঁ। তখন লোকটি বলল, আমি তো উনার খাদেম। হজরত রসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তুমি তার কাছে অনুমতি চাও। তুমি তোমার মাকে বিবস্ত্র অবস্থায় দেখতে পছন্দ করো?’

এই হাদিস শরীফকে অশ্লীল আখ্যা দিয়ে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির আকায়েদ ওয়াল ফিক্হ, নবম ও দশম শ্রেণির কুরআন মজিদ ও তাজভিদ এবং আল হাদিস বইয়ের প্রায় ২৩ লাখ কপিকে ফেরৎ আনা হচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার বিতরণকেন্দ্র থেকে। বিনামূল্যের এসব বই ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার কথা ছিলো।


শেয়ার করুন

0 facebook: