স্টাফ রিপোর্টারঃ
তাবলীগ জামাতের দ্বন্দ্ব নিয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তাবলীগ জামায়াতের অভ্যন্তরীণ কুন্দলে সরকার কোনো
হস্তক্ষেপ করবে না। তাদের সমস্যা তাদেরকেই সুরাহা করতে হবে। তবে আইন-শৃঙ্খলা
পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রাখতে পুলিশ যথাযথ ভূমিকা পালন করবে। কেউ রাস্তা বন্ধ করে
কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করতে চাইলে পুলিশ তা প্রতিহত করবে। কোনোভাবেই আইন-শৃঙ্খলা
পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে দেয়া হবে না।
গতকাল রাতে সাংবাদিকদের
দেয়া এক মুটোফনের সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়ে অবগত করেন, ‘তাবলীগের
এই অভ্যন্তরীণ সমস্যা তাদেরকেই সমাধান করতে হবে। আমরা এ ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার করতে
চাচ্ছি না। (আমরা চাই) তাবলীগের আমির, তাবলীগের যারাই আছেন, তারাই
তাদের দ্বন্দ্ব সুরাহা করুক।’
কে গেল আর কে
আসলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সবকিছু
যেন সিকিউরড থাকে এটা আমরা নিশ্চিত করব। আমরা কোনও ডিসিশন চাপিয়ে দিতে চাই না,
তবে
রাস্তাঘাট যেন বন্ধ না করে ক্লিয়ার থাকে সেটা আমরা নিশ্চিত করব।
কাকরাইল মসজিদে
প্রচুর নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কোথাও কোনো
জায়গায় কোনো ধরণের বিশৃঙ্খলা হতে দেব না। তাদের ভেতরের দ্বন্দ্ব তাদেরকেই ঠিক করতে
হবে।
কোথাও কোনো
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী তৈরি আছে বলে উল্লেখ করে তিনি।
এর আগে বুধবার
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে
পৌঁছান মাওলানা সাদ। তাকে স্বাগত জানানোর জন্য ঢাকার কাকরাইলের মুরুব্বি প্রকৌশলী সৈয়দ
ওয়াসিফুল ইসলামের নেতৃত্বে তাবলীগ জামাতের আরেক অংশের সমর্থকরা অবস্থান করেন।
মাওলানা সাদ
বিরোধীরা তাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না ঘোষণা দিয়ে দুপুর ১২টা থেকেই
বিমানবন্দর চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বিমানবন্দর থানার ওসি নূরে আযম
সিদ্দিকী সাংবাদিকদেরকে জানান, মুসল্লিরা বিমানবন্দর চত্বরে অবস্থান নেয়ায় প্রধান
সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
এ সময়
বিক্ষোভকারীরা জানান, এবারের ইজতেমায় মাওলানা সাদের অংশ নেয়ার বিষয়ে তারা
আগে থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন। এ মোতাবেক তাদের আশ্বাসও দেয়া হয়েছিল যে, মাওলানা
সাদ এবার আসছেন না। কিন্তু বর্তমানে উল্টোটাই জানতে পেরেছেন। এ কারণে তারা রাস্তা
অবরোধ করেন।
তাবলীগের একাংশের
বিক্ষোভের ফলে রাজধানীর ব্যস্ততম ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। হোটেল
রেডিসন থেকে উত্তরা হয়ে আবদুল্লাহপুর ছাড়িয়ে যায় এই যানজট।
উল্লেখ্য,
মাওলানা
সাদ তাবলীগ করা ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না’ বলে বক্তব্য
দেয়ায় তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা। সেখান থেকে
মাওলানা সাদকে এ বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু তিনি উল্টো যুক্তি
দেন। এ নিয়ে মাওলানা সাদের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
একপর্যায়ে
দেওবন্দ মাদ্রাসার অনুসারী বাংলাদেশের আলেমরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তারা তাকে
টঙ্গীতে হওয়া ইজতেমায় আসতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাবলীগ জামাতের বাংলাদেশ শাখার
১১ শূরা সদস্যের মধ্যে ছয়জনই আলেমদের এ সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
ধর্ম ও জীবন
0 facebook: