17 January 2018

কথিত শিক্ষক সুনীল শর্মা ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় গণধোলাই খেয়েছিলেনঃ এমপি সাইমুম

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ কক্সবাজারের রামুতে রত্নগর্ভা রিজিয়া আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুনীল কুমার শর্মাকে গলাধাক্কা দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) সাইমুম সরওয়ার কমলমঙ্গলবার ওই ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক পত্রে উল্টো ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ আনেন তিনি সাইমুম বলেন, ‘আমি গলা ধাক্কা দিয়েছি তা মোটেও সত্য নয়মূলত প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় নিয়ে উচ্চ বাক্য বিনিময় হয়েছিলতাকে আমার শিক্ষক হিসেবে সংবাদে দেখনো হয়েছেঅথচ তিনি কখনো আমার শিক্ষক ছিলেন না

তিনি দাবি করেন, ওই শিক্ষক একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শান্তি বাহিনীর সহযোগী ছিলেন এবং পাক হানাদারদের বাজার করে দিতেন যা এলাকাবাসী জানেনতিনি জিয়াউর রহমানের বিএনপি ও এরশাদ সরকারের জাতীয় পার্টির আমলে সক্রিয় নেতা ছিলেন

আওয়ামী লীগের এই এমপি দাবি করেন, ওই সময় বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ বিরোধী বক্তব্য রাখার কারণে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দ্বারা ১৯৮৫ সালের উপজেলা নির্বাচনে, ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে এবং ৯০ এর গণআন্দোলনে ওই শিক্ষক গনপিটুনির শিকার হন

তিনি দাবি করেন, সুনীল শর্মা ধর্ষণ মামলার একজন অভিযুক্ত আসামিরামু খিজারী বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করলে এলাকাবাসী তাকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দেয়উখিয়ারঘোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও অনুরূপ ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হন

সাইমুম বলেন, খালেদা জিয়া সরকারের আমলে বিএনপির নেতাদের মাধ্যমে তিনি সাজা ভোগ না করে সুবিধা অর্জন করেনতিনি বর্তমানে বিএনপির সাবেক এমপির স্কুলের শিক্ষকতাকে অন্য কেউ জায়গা দেয়নি বলে বিএনপি নেতার আশ্রয়ে আছেন

চিঠিতে ঘটনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, মূলত ওই দিনের ঘটনার সূত্রপাত হলো ঢাকাস্থ রামু সমিতির কার্যকরী সভায় এক সদস্য আমার অনুপস্থিতির কথা বললেআমি দাওয়াত পাইনি বলে যেতে পারিনি

এতে বলা হয়, একদিন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ সাহেব আমাকে রামু সমিতির অনুষ্ঠানের কথা বললে আমি লজ্জা পাইকারণ আমাকে দাওয়াত করা হয়নিঅথচ ফোরকান সাহেব অতিথি হয়ে সব বিষয়ে জানেন

কক্সবাজারের এই এমপি বলেন, আমার বক্তব্যের পরে ঢাকাস্থ রামু সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ ও ডাক বিভাগের সাবেক ডিজি আবদুল মোমেন চৌধুরী তাদের বক্তব্যে বিষয়টি আর ভুল হবে না বলে সুরাহা দেন

তিনি বলেন, উক্ত কমিটির সেক্রেটারি (শিক্ষক সুনীল শর্মার ছেলে) সুজন শর্মা বিষয়টি নিয়ে কর্নেল ফোরকান সাহেবকে বলেন, দাওয়াত করাতে আমি সুজনকে নাজেহাল করেছিএই মিথ্যা বিষয় নিয়ে ফোরকান সাহেব মনক্ষুন্ন হয়ে মিথ্যা অজুহাতে আমার উপর রাগ দেখান

কমল বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে আমি সুজন শর্মার বাবা সুনীল শর্মাকে বলি- আপনার ছেলে আমি এবং ফোরকান সাহেবের মধ্যে যে তিক্ততা শুরু করেছে, এগুলো বন্ধ করতে বলুনবিষয়টি অনেক মানুষের সামনে ঘটলেও তাকে গলাধাক্কা দেয়া হয়েছে এ কথা কেউ বলতে পারবে না

তিনি বলেন, মূলত ওই শিক্ষক আওয়ামী বিরোধী লোকএই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিলকে তাল বানিয়ে বিএনপি ও আমার প্রতিপক্ষদের অপরাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে

প্রসঙ্গত, রোববারের ওই ঘটনায় শিক্ষক সুনীল শর্মা অভিযোগ করেন, তার ছেলে সুজন কুমার শর্মার ওপর ক্ষেভ দেখিয়ে সবার সামনে তাকে গলা ধাক্কা দেন কমলসুজনকে গুম করেফেলারও হুমকি দেন তিনি


শেয়ার করুন

0 facebook: