05 March 2019

রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে ফিলিপাইন যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিনিধিদল


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ ফিরিয়ে আনতে ফিলিপাইন যাচ্ছে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত প্রতিনিধিদলটি আগামী সপ্তাহে ফিলিপাইন যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান আইনজীবী (লিগ্যাল অ্যাডভাইজার) আজমালুল হোসেন কিউসি।

সোমবার বিকালে সুপ্রিমকোর্টের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। জানা গেছে, আগামী ১১ ও ১২ মার্চ প্রতিনিধিদল ফিলিপাইনের বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করবে। সমঝোতায় অর্থ ফেরত পেলে প্রয়োজনে বাংলাদেশ মামলা প্রত্যাহার করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কের কয়েক কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে যোগ দেবেন। যুক্তরাষ্ট্রে দায়ের করা মামলার কার্যক্রম শুরুর আগেই সমঝোতার মাধ্যমে অর্থ ফেরত পাওয়ার চেষ্টা হিসেবে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

আজমালুল হোসেন বলেন, রিজার্ভ চুরির টাকা ফিরিয়ে আনতে আমাদের আইনি লড়াই চলছে। নিউইয়র্ক ফেডারেল কোর্টে মামলা চলছে। আগামী ২ এপ্রিল মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারণ রয়েছে। তবে শুনানির আগেই এ মামলার বিবাদী পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছি। সমঝোতার মাধ্যমে সম্মানজনক সমাধানের জন্যই বসতে যাচ্ছি আলোচনায়। তিনি আরও বলেন, ফিলিপাইনে যাওয়ার আগে আগামী ১০ মার্চ নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনার কৌশল ঠিক করা হবে। এ ছাড়া আগামী ১১ ও ১২ মার্চ মামলার বিবাদী ফিলিপাইনের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিভাগীয় বিচারক ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ইউনিটের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করবে প্রতিনিধিদলটি।

প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ভুয়া পেমেন্ট অর্ডারের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে শ্রীলংকায় যাওয়া দুই কোটি ডলার বিতরণ হওয়ার আগেই ফেরত পায় বাংলাদেশ।

আর ফিলিপাইনে যাওয়া আট কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে দেশটির আদালতের নির্দেশে প্রায় দেড় কোটি ডলার ফেরত আসে। এর পর থেকে পুরো অর্থ ফেরত পাওয়ার দাবি জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন বাকি ছয় কোটি ৬০ লাখ ডলার ফেরত পাওয়ার জন্য মামলা করা হচ্ছে।

এসব অর্থের মধ্যে ১৪ মিলিয়ন ডলার ছাড়া বাকি অর্থের খোঁজ পাওয়া গেছে। যার বড় অংশই দেশটির আদালতের নির্দেশে ফ্রিজ হয়ে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে সম্প্র্রতি ৩২ থেকে ৫৬ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ কোটি ৯০ লাখ ডলার জরিমানার আদেশ দিয়েছেন ফিলিপাইনের আদালত। এই সাজার মধ্য দিয়ে অর্থপাচারের ঘটনায় মায়া সান্তোস আইনগতভাবে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

এর আগেও ফিলিপাইনের বিভিন্ন আদালতে আরসিবিসির দায়েরের বিষয়টি উঠে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইর এক তদন্তে উঠে আসে- হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারও যে সম্পৃক্ততা নেই, সেটিও পরিষ্কার হয়। এসব কারণে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে অর্থ ফেরত পাওয়া সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


শেয়ার করুন

0 facebook: