18 February 2018

অপরাধী ছাড়া সবার জন্য নির্বাচনের দরজা খোলাঃ সংসদে তথ্যমন্ত্রী


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ইনক্লুসিভ (অংশগ্রহণমূলক) নির্বাচনে অপরাধীর অংশগ্রহণের কোনও সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেনতিনি বলেন, নির্বাচনের দরজা অপরাধী ছাড়া সবার জন্য খোলা আছেনির্বাচন দর কষাকষির বিষয় নয়কারো সাজাকে শর্ত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে দরকষাকষি হতে পারে নাগণতন্ত্রের নামে আসামি, অপরাধী, দুর্নীতিবাজকে হালাল করে না অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন

রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন নির্বাচনের প্রশ্নে কাউকে ছাড়া না দেওয়ার প্রস্তাব করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘দেশকে মুক্তিযুদ্ধের পথে রাখতে হলে কোনও দর কষাকষির সুযোগ না দিয়ে, মায়াকান্নায় নরম না করে, অংশগ্রহণমূলকের (নির্বাচন) নামে অপরাধীদের ছাড় দেওয়ার প্রস্তাবে বিভ্রান্ত না হয়ে, জঙ্গি দমন ও অপরাধীদের বিচার অব্যাহত রাখতে হবেসংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে হবেতিনি বলেন, ‘অনেকে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের কথা বলেননির্বাচন ও আদালতের দরজা সবার জন্য খোলাকাউকে জোর করে নির্বাচনের বাইরে রাখা হচ্ছে নাকাউকে জোর করে আদালতে সাজা দেওয়া হচ্ছে নাবিএনপি ই্চ্ছেমতো নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, ইচ্ছেমতো নির্বাচন বর্জন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন করতে হবেউন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে হবেমুক্তিযুদ্ধের পথে দেশকে রাখতে হবেআর এজন্য শেখ হাসিনাকে যুদ্ধ করতে হচ্ছেবিএনপি ও জঙ্গিবাদের যুদ্ধ আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছেতাই নির্বাচনকে যুদ্ধের চশমা দিয়ে দেখতে হচ্ছেতথ্যমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার ধারাবাহিকতা নিয়ে কথা বলেনতিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া যে মামলায় সাজা ভোগ করছেন তা টেনে টেনে ১০টি বছর নিয়েছেনযত রকমের আইনি সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, তা তিনি গ্রহণ করেছেনতড়িঘড়ি কোনও রায় আদালত দেননিখালেদা জিয়ার সাজাকে কেন্দ্র করে বিএনপি নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘খালেদা জিয়ার সাজার পর জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি আবার মাঠে এসেছেবিএনপির এজেন্ডা হচ্ছে নির্বাচনকে বানচাল করে অস্বাভাবিক সরকার ক্ষমতায় আনাএজন্য সহায়ক সরকারের প্রস্তাব মাঠে রাখা হয়েছেতাদের সহায়ক সরকারের কোনও রূপরেখা নেইসংবিধানে এই বিধান নেইএই সহায়ক সরকারের প্রস্তাব নির্বাচন বানচালের একটি উছিলা মাত্রএর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজাএই সাজাকে উছিলা করে নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছেবিএনপিকে রাজনীতির বিষবৃক্ষ আখ্যায়িত করে ইনু বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তান ছাড়ার মতো জাতি আজ একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেসিদ্ধান্ত নিতে হবে, গণতন্ত্র চাইলে বিএনপিকে বর্জন করতে হবে

জামায়াত-জঙ্গিকে নির্বাচনের রাজনীতির বাইরে রাখতে হবেবিএনপিকে ক্ষমতার রাজনীতি থেকে বর্জনে জাতীয় সিদ্ধান্ত নিতে হবেতিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ৭৫-এর পরে বিএনপি নামের বিষবৃক্ষ রোপণ করেছিলেনখালেদা জিয়া তা সার-পানি দিয়ে বড় করেছেনএই বিষবৃক্ষ রেখে গণতন্ত্রের বাগান সাজানো চলে না, তা সম্ভবও নয়বিএনপি নামক বিষবৃক্ষ নিয়ে গণতন্ত্র নিরাপদ হতে পারে নাগণতন্ত্রের বাগানে এই বিষবৃক্ষ থাকতে পারে নাঅবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করেছেন দাবি করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্যপ্রবাহের বিস্তারে গোটা দেশকে আমরা একটি কাঁচের ঘর তৈরি করে দিয়েছিএখানে কোনও কিছু আড়াল করার জায়গা নেইপত্রিকা বলুন আর টিভি বলুন, যা ইচ্ছা তা-ই স্বাধীনভাবে বলছে, লিখছেবিএনপির লোকের প্রতিরাতে টক শোতে এমনভাবে কথা বলছেন যেন সরকার নেই

তিনি বলেন, ‘সরকার সমালোচনায় ভয় পায় নাসরকারের ভালো গুণ হচ্ছে, শুধরে নেয়, পদক্ষেপ নেয়সেজন্য দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে আমরা কেউই রেহাই পাই নাযাদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ওঠে, তাদের দুদক ও আদালতের বারান্দায় হাঁটতে হচ্ছেসরকারের উন্নয়নের পথে নানা বাধা রয়েছে মন্তব্য করে হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘সরকারের এই বিস্ময়কর উন্নয়ন নির্বিঘ্ন ছিল নাসরকারের উন্নয়নের পথে নানা বাধা ছিল, ষড়যন্ত্র ছিল, কাঁটা বিছানো ছিলএখানে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছেসেই ষড়যন্ত্রের চেহারা উন্মোচন হয়েছেএকাত্তরের ষড়যন্ত্রকারীরাই এই ষড়যন্ত্র করছেউন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যহত থাকা নিয়ে জনমনে শঙ্কা রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অশান্তির শক্তিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি ও খালেদা জিয়া রাজনীতির মাঠে রয়েছেমানুষ মনে করে, যতই ভোল পাল্টাক, নির্বাচনের জন্য মায়াকান্না করুন না কেন, তিনি কিন্তু বদলাননিশুধরাননি


শেয়ার করুন

0 facebook: