স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ভারতের পশ্চিমবংঙ্গের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক বাংলাদেশবিরোধী ভয়ঙ্কর এক মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন আমি
বাংঙ্গালী এটা আমার অহংকার, কাটা তারের বেড়া আমাদের
বন্ধনকে আটকাতে পারবে না, আগামী ২০ বছরের মধ্যে দু’ই বাংলা এক হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষার টানে দুই বাংলার হাজার
হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় বেনাপোল চেকপোস্ট নোমান্সল্যান্ড
এলাকায়। ভৌগোলিক সীমারেখা ভুলে
কেবলমাত্র ভাষার টানে গতকাল বুধবার সকালে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করেই কার্যত দলে দলে মানুষ
যোগ দেন ২১ শের মিলন মেলায়।
“ভাষা শহীদদের
শ্রদ্ধায় মাথানত করতে বাংলাদেশের বাঙালিদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের
বাঙালিরাও। সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে
অস্থায়ী শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দুই বাংলার মানুষ, রাজনৈতিক ,সামাজিক, ব্যাবসায়ীক ও সাংস্কৃতিক দল এবং সরকারের প্রতিনিধিরাও। দু’দেশের বেনাপোল ও বনগাঁও পৌর সভা যৌথভাবে এই মিলন মেলার আয়োজন করেন। নোমান্স ল্যান্ডে নির্র্মিত
অস্থায়ী শহীদ বেদিতে সকাল ৯ টায় প্রথম ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান,
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক,
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল পৌর সভার মেয়র আশরাফুল
আলম লিটন। এবং পশ্চিম বংগের বনগাও
অঞ্চলের সাংসদ শ্রী মমতা ঠাকুর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাধিপতি
শ্রীমতি রহিমা মন্ডল,বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাও পৌর সভার মেয়র শংকর আঢ্য ,উওর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাপতি রহিমা মন্ডল ও ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল
ব্যানার্জি।
বাংলাদেশ
আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পিযুস কান্তি ভট্রাচার্য্য, বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন, যশোর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শাহীন চাকলাদার. শিল্পী জয়ন্ত
চট্রপাধ্যায়, কিরন চন্দ্র রায় ও ফাতেমাতুজ্জোহরা উভয় দেশের বিভিন্ন
সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক সংগঠনগুলো শতস্ফ‚র্তভাবে অংশ নেয় এ অনুষ্ঠানে। তারা একই মঞ্চে গাইলেন ভাষা শহীদদের স্মরনে বাংলার জয়গান। নেতারা শ্রদ্ধা জানাতে হাতে হাত রেখে ঊর্ধ্বে তুলে
ধরলেন বাংলা ভাষাকে।মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে বেনাপোল চেকপোস্ট নোম্যান্স ল্যান্ডে এভাবেই কাটালেন
দুই বাংলার ‘বাংলা ভাষাভাষী’ মানুষ। একই আকাশ-একই বাতাস, দুই বাংলার মানুষের ভাষা এক। ”আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি বলে বাংলাদেশের মানুষের
জন্য আমাদের প্রাণ কাঁদে। তাই তো বারবার ছুটে আসি দুই দেশের বাঙালি বাংলাভাষী মানুষের পাশে।” আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে
যৌথ ভাবে দু দেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে প্রতিবারের
ন্যায় এবারও দিবসটি পালন করলো দুই বাংলার মানুষ। দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় সহ নানা রং এর ফেস্টুন,
ব্যানার, প্লেকার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্নিল সাজে সাজানো হয় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা। ভাষার টানে বাঙালির বাধন হারা
আবেগের কাছে মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় দ’ুবাংলার মানুষ। দু’দেশের সীমান্ত রেখা ভুলে নিরাপওা বেস্টনি পেরিয়ে ভাষা প্রেমীরা ছুটে এসে একে
অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে মিস্টি বিতরন করে উভয়কে বরন করে নেয়া
দুই বাংলার মানুষের এ মিলনমেলায় উভয় দেশের সীমান্তবর্তী বাসিন্দাদের মধ্যে উৎসাহের
সৃষ্টি হয়। ফুলের মালা ও জাতীয় পতাকা
বিনিময় করে উভয় দেশের আবেগপ্রবণ অনেক মানুষ।
বেনাপোল - পেট্রাপোল
চেকপোস্টে ঢল নামে হাজার হাজার মানুষের। ক্ষণিকের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায় আন্তর্জাতিক সীমারেখা। ভাষা দিবসের মিলনমেলায় বিজিবি বিএসএফকে দুদেশের জাতীয় পতাকা
ও ফুল দিয়ে শুভেচছা জানায়। এরপর দু’দেশের জাতীয় পতাকা উড়িয়ে হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী
মানুষ দিবসটি উদযাপন করে যৌথভাবে। এ সময় ভাষার টানে বাঙালির বাঁধনহারা আবেগের কাছে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় দুই
বাংলার মানুষ। এর মধ্যদিয়ে বোঝা গেল রফিক,
শফিক, বরকত ও সালামের তরতাজা রক্ত
বৃথা যায়নি। ভাষার আকর্ষণ ও বাঙালির নাড়ির
টান যে কতটা আবেক ও প্রীতিময় হতে পারে তাও বুঝিয়ে দিল মহান একুশে ফেব্রুয়ারি। সমগ্র অনুষ্ঠানে নেয়া হয়
নজিরবিহীন নিরাপত্তা। কড়াকড়ি আরোপ করা হয় দুই সীমান্তে। বেনাপোল পেট্রাপোল চেকপোস্টে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না পারে
সেজন্য বিজিবি ও বিএসএফ অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করে দুই সীমান্তে। সীমান্ত টপকে যাতে কেউ
অবৈধভাবে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবি ও বিএসএফ কাঁটাতারের বেষ্টনী ও বাশের
বেড়া দিয়ে কঠোর নিরাপওা ব্যাবস্থা গড়ে তোলা হয়। দুই বাংলার নামী দামি শিল্পীদের মধ্যে ভারতের
শীর্ষেুন্দ মুখোপাধ্যায়, সঞ্জিব চট্রপাধ্যায় ও অনুপম
রায় ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত শিল্পী ফাতেমাতুজ্জোহরা, ও কিরন চন্দ্র রায় ২১ এর সংগীত পরিবেশন ও আবৃত্তি করেন।
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
0 facebook: