24 October 2018

সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিলের আদেশ বিকালে

ফাইল ছবি
স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিলের বিষয়ে আদেশ আজ বুধবার বিকালে দেবেন হাইকোর্ট

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মুহম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশ দেবেনবেলা সাড়ে ৩টায় এ বিষয়ে আদেশের জন্য রাখা হয়েছে

এদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় অর্থের উৎসের বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনের আদেশ না দেয়ায় চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন আইনজীবীরা

আজ বুধবার চেম্বার আদালতে এ আবেদনের শুনানি হবে বিষয়টি খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যরিস্টার নওশাদ জমির নিশ্চিত করেন এর আগে মঙ্গলবার এ মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষ শুনানি শেষ করে

শুনানিতে দুদক আইনজীবী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা বৃদ্ধি করে যাবজ্জীবন চান তবে অ্যাটর্নি জেনারেল পাঁচ বছরের সাজাই বহাল চেয়েছেনপরে আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য করেনতবে কোন বিষয়ে আদেশের জন্য রাখা হয়েছে তা উভয়পক্ষের আইনজীবীরা পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারেননি

ওই দিন বেলা ১১টায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীসহ অন্যরা আদালত থেকে বেরিয়ে যান বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অর্থের উৎসের বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য অতিরিক্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চেয়ে সোমবার একটি আবেদন করেন এজে মোহাম্মদ আলীওই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট তা নথিভুক্ত করার আদেশ দেন

আদেশে বলা হয়, মূল আপিলের যুক্তিতর্ক শেষে এই আবেদনের বিষয়ে আদেশ দেয়া হবেমঙ্গলবার যুক্তিতর্ক শুরু হওয়ার আগেই এজে মোহাম্মদ আলী ওই আবেদনের ওপর আদেশ চাইলে আদালত যুক্তিতর্ক শেষে আদেশ দেয়া হবেও বলে জানান

এ সময় তিনি বলেন, তা হলে এই আদেশটিই (নথিভুক্ত করে রাখার আদেশ) দেন, আমরা এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাব বিচারক তখন বলেন, ‘সে আপনারা যেতে পারেনএ ছাড়া ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে পরে এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তা হলে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত আসা পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখা হোকএ পর্যায়ে আদালত তা প্রত্যাখ্যান করলে মোহাম্মদ আলী যুক্তিতর্কে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আদালত ত্যাগ করেন

পরে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, আবদুর রেজ্জাক খান, ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, আমিনুল ইসলাম, এএইচএম কামরুজ্জামন, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, মো. আখতারুজ্জামান, অ্যাডভোকেট মো. ফারুক হোসেন ও ব্যারিস্টার এহসানুর রহমানসহ অন্য আইনজীবীরা আদালত থেকে বেরিয়ে যান শুনানি শেষে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তিতর্কে দুদকের পক্ষ থেকে আমরা সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন চেয়েছিআইন অনুযায়ী বিচারিক আদালতের পাঁচ বছর সাজা দেয়া ঠিক হয়নি

তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার করা আপিলসহ চারটি আবেদনের ওপর ২৮ দিন শুনানি হয়েছেএর মধ্যে ২৬ কার্যদিবসে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা অতিরিক্ত সাক্ষ্য দেয়ার জন্য একটি দরখাস্ত নিয়ে এসেছিলেন সোমবার তাদের ওই দরখাস্ত শুনে দুপক্ষের যুক্তিতর্কের পর আদেশ দেবেন বলে আদালত নথিভুক্ত করে রাখেন

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, নিম্নআদালত যে সাজা দিয়েছে তা সঠিকওই সাজা যাতে বহাল থাকে আমি সেই মর্মে আদালতের কাছে প্রার্থনা করেছিসাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করেছে দুদকআমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আবেদন করিনিসে জন্য সাজা বৃদ্ধির ব্যাপারে কোনো বক্তব্য রাখার সুযোগ আমার ছিল না তিনি বলেন, আমি বলেছি- বিদেশ থেকে যে অর্থ এসেছে তা এতিমদের জন্য এসেছেসেখানে লেখা ছিল প্রাইমমিনিস্টার অরফানেজ ট্রাস্ট

সেই অর্থটা পরবর্তী সময়ে দুটি এতিমখানায় দেয়া হয়েছেতার মধ্যে একটি হল বাগেরহাটে জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ও বগুড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টকাজেই টাকা যে সরকারি টাকা এবং রাষ্ট্রের অর্থ, জনগণের অর্থ এটি অস্বীকার করার উপায় নেই
সুতরাং এই আত্মসাতের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেকেই অপরাধীনিম্নআদালত সঠিকভাবেই সাজা দিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘না আমরা আদালত বর্জন করিনিশুনানি থেকে বিরত থেকেছিআজ আদালতে যাবগত ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান মামলাটিতে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন

একই সঙ্গে খালেদার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত রায় ঘোষণার ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকালে রায়ের সার্টিফায়েড কপি বা অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাএর পর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি তারা এ আবেদন করেন

২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ এবং অর্থদণ্ড স্থগিত করে নথি তলব করেনএর পর ৭ মার্চ অপর আসামি মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামালের আপিলও শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট পরে ২৮ মার্চ খালেদার সাজা বাড়ানোর জন্য দুদকের করা আবেদনে রুল দেন হাইকোর্ট১০ মে আরেক আসামি শরফুদ্দিনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন আদালতএখন তিন আসামির আপিল ও দুদকের আবেদনের রুল আদালতে শুনানি হয়

মামলায় খালেদা জিয়াকে ১২ মার্চ হাইকোর্ট চার মাসের জামিন দেনপরে কয়েক দফা তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয় গত ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত খালেদা জিয়ার জামিন হলেও পরে আর মেয়াদ বাড়ানো হয়নিআগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আপিলটি নিষ্পত্তির নির্দেশনা রয়েছে


শেয়ার করুন

0 facebook: