29 December 2017

পশ্চিমারা মালালাকে নিয়ে হইচই করেছিল কিন্ত তামিমির বিষয়ে নিশ্চুপ

স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ ১৬ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি তরুণী আদ তামিমিকে কয়েক দিন আগে গ্রেফতার করেছে ইসরাইলি সেনারা মাধ্য রাতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় আগ্রাসনবিরোধী এই প্রতিবাদী তরুণীকে

গ্রেফতারের সময় তিনি ইসরাইলি সেনাদের তিনি চড় থাপ্পড় বা ঘুষি মেরেছেন বলে অভিযোগ করেছে ইসরাইল গ্রেফতারের পরদিন তাকে দেখতে গেলে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মাকেও

গ্রেফতারের আগের দিনও তামিমির বাড়ির আঙ্গিনায় প্রবেশ করে কড়া প্রতিবাদের মুখে পড়েছিল ইসরাইলি সেনারা এর আগে তামিমির এক চাচাতো ভাইয়ের মাথায় লেগেছিল ইসরাইলি রাবার বুলেট তাদের বাড়ির জানালা ভেঙে ছোড়া হয়েছিল টিয়ার গ্যাস বর্তমানে তামিমি, তার মা চাচাতো ভাই ইসরাইলি কারাগারে দিন কাটাচ্ছেন

তবে রহস্যজনকভাবে ইসরাইলি আগ্রসনবিরোধী এই প্রতিবাদকারীর বিষয়ে সম্পূর্ণ নিরব রয়েছে পশ্চিমা নারীবাদী, মানবাধিকার কর্মী কিংবা রাজনৈতিক নেতারা নারী অধিকার কিংবা মানবাধিকার বিষয়ে তারা সর্বদা সোচ্চার থাকলেও এই ইস্যুতে তাদের মুখ কলম বন্ধ রয়েছে

অথচ তালেবানের হাতে গুলিবিদ্ধ মালালাকে নিয়ে তারা সব সময়ই উচ্চকণ্ঠায় ছিল মালালার মতোই কিংবা তারো চেয়ে বেশি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার তামিমি কিন্তু নারী ক্ষমতায়ন কিংবা নারীর অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীরা এবার সম্পূর্ণ চুপ

১৫ বছর বয়সী মালালা ইউসুফজাই যখন তেহরিক তালেবানের গুলিতে আহত হয়; সে সময় তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল এর ঠিক উল্টো সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন আমিই মালালানামে একটি পিটিশন জারি করেছিলেন


মালালার পাশে দাঁড়াওনামে প্রচারণা শুরু করেছিল ইউনেসকো সে সময়কার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন আমন্ত্রণ করেছিলেন মালালাকে জাতিসঙ্ঘের অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছিলেন মালালা বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন এক প্রভাবশালী নারীর তালিকায় রেখেছিল মালালাকে

গ্ল্যামার ম্যাগাজিনের বছরের সেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত হয়েছিল মালালা এখানেই শেষন নয়; ২০১৩ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা মালালা পরের বছর জিতেই নিয়েছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার

হিলারি কিনটন কিংবা অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ড অবস্থান নিয়েছিলেন মালালার পক্ষে নিকোলাস ক্রিস্টোফের মতো বিখ্যাত সাংবাদিকেরা ছিলেন এই দলে এমনকি মালালা দিবস নামে একটি দিবস চালু করা হয়েছে

কিন্তু ইসরাইলি আগ্রাসনবিরোধী তামিমির নামে কোনো হ্যাশট্যাগ ক্যাম্পেইন হয়নি, নারীবাদী কিংবা মানবাধিকার কর্মীদের কেউ তার পক্ষে কোনো বিবৃতিও দেয়নি কোনো তামিমি দিবস নেই, তার মুক্তি কামনা কিংবা ইসরাইলি আচরণের নিন্দা জানিয়েও কেউ বক্তব্য দিচ্ছে না

উল্টো যুক্তরাষ্ট্র অতীতে তার ভ্রমণ ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে দীর্ঘ দিন ধরেই মাতৃভূমির ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন এই ফিলিস্তিনি তরুণী

ইসরাইলিদের হাতে তার এক চাচা এক চাচাতো ভাই নিহত হয়েছে অতীতে অনেকবারই তার বাবা-মা ভাই গ্রেফতার হয়েছে তার মায়ের পায়ে গুলিও লেগেছে

দুই বছর আগে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পরা এক ভিডিওতে দেখা গেছে তামিমির ছোট ভাইকে ইসরাইলি সেনারা তুলে নিতে চাইলে তিনি কিভাবে ভাইকের রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন অথচ ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদের এই উচ্চকণ্ঠ তরুণী তার ওপর চলা অন্যায়ের বিষয়ে চুপ করেছেন পশ্চিমাবশ্ব

সূত্র : আলজাজিরা


শেয়ার করুন

0 facebook: