নিজস্ব
প্রতিবেদকঃ বায়েজিদ
আহমেদ খান। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি। শিবিরের রাজনীতি
থেকে এসে ছাত্রলীগের এমন শীর্ষ পদে আসা নিয়ে মুখরোচক আলোচনা রয়েছে তার নিজ এলাকায়।
নেতা
হওয়ার পর টেন্ডার আর চাঁদাবাজি করে কামিয়েছেন শত কোটি টাকা। নামে বেনামে গড়ে তোলেছেন
অনেক সম্পদ। অনুসন্ধানে জানা যায়,
বায়েজিদ পড়াশোনা করেছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় একটি মাদ্রাসায়। দীর্ঘদিন
ছিলেন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ছিলেন মাদ্রাসার কমিটির দপ্তর সম্পাদকও।
এরপর
ঢাকায় আসলে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন ছাত্র রাজনীতি
থেকে। পরে গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রলীগের মিছিল-সমাবেশে যোগ দিতে থাকেন। পরে আনিস-রানা
কমিটির সাংগঠনকি সম্পাদক হন তিনি। কিন্তু সাংগঠনিক সম্পাদকেরর মতো গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট
পাওয়ার পরেও এলাকামুখী হতেন না । শিবিরের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকশ হওয়ার ভয়ে খুব একটা
আলোচনায়ও থাকতেন না বায়েজিদ।
২০১৫
সালের নগর দক্ষিণ সম্মেলনে অপরিচিত মুখ বায়েজিদ আহমেদ সভাপতি নির্বাচিত হন। মূলত সিন্ডিকেটের
কয়েকজন সদস্য তার শিবির দুর্বলতার কারণ জানতেন। আর এই দুর্বলতাকে পুজিঁ করে নিয়ন্ত্রণে
রাখার কৌশল হিসেবে নেতা বানানো হয় বায়েজিদকে। নেতা হওয়ার পরেই ধরাকে সরা জ্ঞান করতে
শুরু করেন বায়েজিদ। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বেয়াদবির কারণে ধিরে ধিরে তার রাজনৈতিক গুরুরাই
দূরে সরে যান বায়েজিদের কাছ থেকে। পিডব্লিউডি, শিক্ষাভবন, বিদ্যুৎ
ভবন, নগর
ভবন, রেল
ভবনসহ বেশ কয়েকটি ভবনের টেন্ডার নিয়ে সংঘাতেও জড়িয়ে যান সিনিয়রদের সঙ্গে।
২০১৭
সালের শুরুর দিকে ভয়াবহ সংঘর্ষ বাধে শিক্ষাভবন দখলকে কেন্দ্র করে। এ সংঘাতে সরাসরি
বায়েজিদ অস্ত্র হাতে অংশ নেন। যা ওই সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপক আলেচিত হয়। পরে শিক্ষাভবনের
সকল টেন্ডারের ৪০ ভাগ কাজ দেওয়ার শর্তে বিষয়টির সমঝোতা করে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর
সঙ্গে নিজের ছবি এডিটের মাধ্যমে জুড়ে দিয়ে পোষ্টার করে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেন তিনি।
পরে সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে সে যাত্রায় বেচেঁ যান তিনি। জানা যায়, বর্তমানে
সারাদেশে প্রায় দুইশত কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে কালভার্ট নির্মাণ, ভবন নির্মান, রাস্তা
ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান বিএকে কনস্ট্রাকশন্স লিমিটেড
ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাজ করেন।
তিনি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার সঙ্গেও সংঘাতে লিপ্ত হন নীলক্ষেত হাই স্কুলের
ভবনের কাজ নির্মাণ নিয়ে। পরে সিনিয়রদের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সমঝোতা হয়। জানা যায়, রাজধানীর
বাড্ডা এলাকায় এগারো একর জায়গা কিনেছেন বায়েজিদ। এছাড়া নারায়ণগঞ্জের ভুলতা, পিরোজপুরের
মঠবাড়িয়ায়ও তার নামে-বেনামে জমি রয়েছে। মিরপুরে নীরা গার্মেন্টস নামে একটি গার্মেন্টসের
মালিকানাও তার। দুইটি প্রাইভেট কার,
একটি হাইস গাড়ি ও একটি বিএমডব্লিউ ব্রান্ডের গাড়ি রয়েছে তার। পল্টনে
রয়েছে নিজস্ব বিলাসবহুল অফিস। এছাড়া তার নামে রয়েছে চারটি ব্যাংক একাউন্ট। এছাড়া বায়েজিদের
পিতার নামে চালু থাকা একটি একাউন্টেও লেনদেন করা হয়।
বায়েজিদ
আহমেদ যে মাদ্রাসায় পড়তেন সেই মাদ্রাসার একজন স্কুল শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে
বলেন, শিবিরের
ভালো নেতা ছিলেন তিনি। দপ্তর সম্পাদক ছিলেন মাদ্রাসার। পরে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকও
হন। কিন্তু বর্তমানে নাকি ছাত্রলীগের অনেক বড় নেতা। একই কথা বললেন স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ
ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। কথার সত্যতা মিলেছে তার বাল্যকালের বন্ধুদের বক্তব্যেতেও।
জানা যায়, দক্ষিণের
সভাপতি হওয়ার পূর্বেই প্রেমের সম্পর্ক ছিলেঅ ইডেন মহিলা কলেজের এক ছাত্রীর সঙ্গে। ইংরেজি
বিভাগের ওই ছাত্রীর সঙ্গে পরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে রাজধানীর সেগুনবাগিচায়
স্ত্রীকে নিয়েই থাকছেন তিনি। তবে চলচ্চিত্রের এক নায়িকার সঙ্গে বায়েজিদের ঘনিষ্ঠতার
কারণে সংসারে মনোমালিণ্য দেখা যায়। এ নিয়ে মামলা করারও উদ্যোগ নিয়েছিলো বায়েজিদের শশুর।
পরে সিনিয়র কয়েকজন নেতার হস্তক্ষেপে ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যান কবায়েজিদ। বায়েজিদের শিবির
সংশ্লিষ্টতা, অপকর্ম, বিবাহের
কাগজপত্র ও ব্যাংক একাউন্ট,
গাড়িসহ যাবতীয় তথ্য প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
Aigulo to purai vua potreka
ReplyDelete