![]() |
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ নারীদের জন্য সৌদি আরব ও আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থানগুলোর অন্যতম। নতুন এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বের ৫০০ বিশেষজ্ঞ এই জরিপে অংশ নেন এবং তারা সৌদি আরবকে বিশ্বের পঞ্চম ও আমেরিকাকে ১০ম বিপজ্জনক স্থান বলে চিহ্নিত করেন।
নারী ইস্যুতে থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন এই জরিপের আয়োজন করে। গতকাল (সোমবার) প্রকাশিত এ জরিপে ভারত, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও সোমালিয়া রয়েছে তালিকার শীর্ষে। তবে যে আমেরিকা নারী ও মানবাধিকারের জন্য এত চেচামেচি করে সেই দেশ নারীর জন্য সবচেয়ে ১০টি বিপজ্জনক দেশের অন্যতম।
যদিও সৌদি আরব এ তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে তবে নারীর অর্থনৈতিক প্রবেশাধিকার, কাজের স্থান ও সম্পত্তির অধিকারের বৈষম্যের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।
এছাড়া, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় চর্চার দিক দিয়ে সৌদি নারীরা যে ঝুঁকি মোকাবেলা করেন তাতে দেশটির অবস্থান পঞ্চম। গত শনিবার সৌদি নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর এ জরিপ প্রকাশিত হলো।
ইয়েমেনে সৌদি জোটের হামলায় হুতি কমান্ডার নিহত
আরব জোটের বিমান হামলায় ইয়েমেনের হাজ্জাহপ্রদেশের হার্দফ্রন্টে কয়েক ডজন হুতি যোদ্ধার সঙ্গে এক কমান্ডারও নিহত হয়েছেন।
নিহত হওয়া ওই কমান্ডারের নাম আবদেল রাজাক আবদুল্লাহ আলি আল নামি। তবে তিনি আবু আহমাদ নামে পরিচিত ছিলেন।
![]() |
হার্দফ্রন্টে হুতি যোদ্ধাদের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। সেখানে সরকারি বাহিনী ও হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াই ক্রমাগত বেড়েই চলছে।
তবে আবু আহমাদ কবে নিহত হয়েছেন, সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি হুতি বিদ্রোহীরা।
তবে সূত্র জানিয়েছে, তিনি প্রায় মাসখানেক আগে নিহত হয়েছেন। যোদ্ধাদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে হুতিরা এতদিন এ তথ্য গোপন রেখেছিলেন।
১০ দিন আগে আবু আহমাদের ভাই রাদওয়ানও নিহত হন।
আল আরাবিয়া জানিয়েছে, বিভিন্ন ফ্রন্টে পরাজয়ের কথা গোপন রাখার কৌশল অবলম্বন করেছেন হুতিরা। সম্প্রতি সরাসরি যুদ্ধে কয়েকশ হুতি কমান্ডার নিহত হয়েছেন।
ইয়েমেনে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা মানুষ
২০১৫ সাল থেকে চলা সংঘর্ষ, সহিংসতা ও সৌদি জোটের বিমান হামলা এখন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে ইয়েমেনে। ইরান সমর্থিত হাউথি বিদ্রোহী ও সৌদি জোটের মধ্যে চলমান সংঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি দীর্ঘ হচ্ছে প্রাণহানির তালিকা।
![]() |
ইয়েমেনের বন্দরনগরী হুদায়দা কিছুটা যুদ্ধমুক্ত থাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে বেঁচে ছিলেন এখানকার বাসিন্দারা।
তবে বন্দরের দখলকে কেন্দ্র করে এই অঞ্চলের সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। অব্যাহত সংঘর্ষে প্রাণহানির পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে আরো মানুষ।
যুদ্ধকবলিত এলাকায় খাবার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অনেকে। বিপর্যয় দেখা দিয়েছে হাসপাতালগুলোতেও।
তারা বলেন- হাসপাতালে পানি নেই, বিদ্যুৎ নেই। এমন কি প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রীও নেই। হামলার আশঙ্কায় চিকিৎসকরাও হাসপাতালে আসছেন না।
এখানকার অধিকাংশ লোকজনের থাকার জায়গা নেই। সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আমাদের আর আশ্রয় দেয়ার লোক নেই। কর্মসংস্থান, নেই, খাবারও নেই। শুধু মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা ছাড়া আমাদের আর কোনো কাজ নেই।
হাউথিদের দখল থেকে সৌদি জোট হুদায়দা বন্দর পুনরুদ্ধারের দাবি করলেও, তা উড়িয়ে দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
ইয়েমেনের লোহিত সাগর বন্দর কার্যক্রম কমিটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইয়াহইয়া সারাফ উদ্দিন বলেন, হুদায়দা বন্দরে মালামাল ওঠানামা স্বাভাবিক রয়েছে। বর্তমানে সালিফ ও হুদায়দা বন্দর দিয়ে ইয়েমেনে ত্রাণ সহায়তা আসছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইতোমধ্যে ইয়েমেনকে বিশ্বের অন্যতম মানবিক দুর্যোগপূর্ণ দেশ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। এ অবস্থায় বন্দরগুলো কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিপর্যয় দ্বিগুন হবে।
ইয়েমেনিদের রক্ষার পাশাপাশি সৌদি আগ্রাসনের বিরুদ্ধ সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ার ঘোষণা দিয়েছে ইয়েমেনের হাউথি সমর্থিত নিরাপত্তা বাহিনী। এছাড়া, দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বন্ধ করতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থাগুলোকে ঘুষ দেয়ার অভিযোগ করেছে হাউথি বিদ্রোহীরা।
ইয়েমেনের কোস্টগার্ডের কমান্ডার মেজর জেনারেল আব্দুল রাজ্জাক বলেন, শত্রুদের মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। সাধারণ মানুষের জীবনের রক্ষায় আমরা কোনো ছাড় দেবো না। হুদায়দা আমাদের শেষ ঠিকানা। এটা ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
সৌদি জোট ও হাউথি বিদ্রোহীদের কঠোর অবস্থানের কারণে ইয়েমেনের পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, দীর্ঘ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে হাউথি বিদ্রোহীরা দুর্বল হয়ে পড়লেও নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে আরো মরিয়া হয়ে উঠতে পারে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক আলী আল খালাকি বলেন, দুই পক্ষই যুদ্ধের জয় নিজেদের ঘরে তুলতে ছাড় দিতে রাজি নয়। হুদায়দা বন্দর দখলে নিতে পারলে কৌশলগতভাবে এগিয়ে থাকবে সৌদি জোট।
তাদের জন্য ইয়েমেনের পশ্চিম উপকূলীয় এলাকা নিয়ন্ত্রণে নিতে আরো সহজ হবে। হুদায়দা বন্দর কেবল ত্রাণ সরবরাহের জন্য নয়, সামরিক ও যুদ্ধের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে, সৌদি জোটের বিমান হামলার জবাবে রিয়াদের বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে হাউথি বিদ্রোহী। তবে এসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহতের কথা জানিয়েছে সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: