10 January 2019

আ’লীগের পাঁচ নেতার বহিষ্কার চাইলেন পরাজিত মঈন


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মুহম্মদ মঈনউদ্দিন মঈন আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজি সফিউল্লাহ মিয়াসহ পাঁচ নেতার বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেনতিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ধানের শীষ প্রতীকের কাছে পরাজিত হন

বুধবার রাত ৮টায় ফলাফল ঘোষণার পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হাইওয়ে রেস্তোরা উজান ভাটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে তাৎক্ষণিক এক সংবাদ সম্মেলনে মঈনউদ্দিন মঈন এই দাবি করেন

এ সময় তিনি আগামী সাত দিনের মধ্যে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম তালুকদারের অপসারণেরও দাবি জানান তিনি

সংবাদ সম্মেলনে পরাজিত প্রার্থী মঈন বলেন, আমি কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকতবু আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক হাজি সফিউল্লাহ মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ মুন্সি, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান রতন, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা কামরুজ্জামান আনসারি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহজাহান আলম সাজু বিভিন্ন সময়ে আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা ও বিএনপির প্রার্থী আবদুস সাত্তারকে জয়ী করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন

পাশাপাশি যখন আমি ভোটের ব্যবধানের কাছাকাছি চলে আসলাম তখনই বিএনপির প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য তারা প্রকাশ্যে দলীয় নেতাকর্মীকে হুমকিধামকি দেওয়া শুরু করেনযদিও আমাকে নির্বাচনের মাঠে তারাই প্রতিশ্রুতি দিয়ে নামিয়েছেনতাই তাদের প্রত্যেককে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাইঅন্যদিকে আশুগঞ্জ থানার ওসি বিএনপির বিভিন্ন মিছিল-মিটিংয়ে সহযোগিতা করলেও আমার নেতাকর্মীদের উঠান বৈঠকেও বাধা দিয়েছেন

বিএনপি ও জামায়াতের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ওসি তাকে নির্বাচনে পরাজিত করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনিএছাড়া আগামী সাত দিনের মধ্যে ওসিকে অপসারণ না করা হলে অনশনসহ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবরোধ করা হবে

সবশেষে মঈন উদ্দিন বিজয়ী প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভইয়াকে অভিনন্দন জানিয়ে যেকোনো কাজে তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করবেন বলে জানান

সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু নাছের আহমেদ, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজি আমির হোসেনসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন

গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আশুগঞ্জ উপজেলার তিনটি কেন্দ্রে নানা অনিয়মের ঘটনা ঘটেসেদিন কেন্দ্রগুলোর ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়পরে পুনরায় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন

সেদিন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মঈন উদ্দিনের চেয়ে ১০ হাজার ১৫৯ ভোটে এগিয়ে ছিলেনধানের শীষ প্রতীকে পড়েছিল ৮২ হাজার ৭২৩ ভোটআর মঈন উদ্দিনের কলার ছড়ি প্রতীকে পড়েছিল ৭২ হাজার ৫৬৪ ভোট

তিন কেন্দ্রের মোট ভোটার ১০ হাজার ৫৭২ জনএর মধ্যে যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিন হাজার ৮৪০ জন, সোহাগপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিন হাজার ১৫ জন ও বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে তিন হাজার ৭১৭ জনএই তিন কেন্দ্রে বুধবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলেএরপর শুরু হয় ভোট গণনা

গণনা শেষে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের ফলাফল ঘোষণা অনুযায়ী, তিন কেন্দ্রে মোট ভোট পড়ে ৪ হাজার ২৮৯টিএর মধ্যে ধানের শীষ প্রতীকে পড়ে ১ হাজার ২৭৪টি ভোট, কলার ছড়ি প্রতীকে পড়ে ২ হাজার ৮৫৫ ভোট ও বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা সিংহ প্রতীকে পান ১০১ ভোটএতে বিএনপি প্রার্থী উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়া নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ৮ হাজার ৫৭৮ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন


শেয়ার করুন

0 facebook: