স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ শুধু অটোরিকশার জন্যই রাজশাহীর অটোচালক জসিম উদ্দিন ওরফে জয়কে (২০) গলাকেটে হত্যা করা হয়। এর আগে তাকে মাদকসেবন করানো হয়। নেশায় বিভোর হয়ে উঠলেই জয়ের গলায় ছুরি চালায় তার বন্ধুরা।
রাজশাহী মহানগরীর বড়বনগ্রাম মাস্টারপাড়া মহল্লার আরফান আলীর ছেলে জয়ের হত্যার ঘটনায় জড়িত তিনজনকে শুক্রবার সকালে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে এসব তথ্য জানায় শাহমখদুম থানা পুলিশ।
এ সময় হত্যাকাণ্ড ব্যবহৃত ছুরিসহ উদ্ধারকৃত নানা আলামতও দেখানো হয় সাংবাদিকদের। গত বুধবার রাতে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার সরমংলা এলাকা থেকে জয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি দুদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন।
এ নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে নগরীর শাহমখদুম থানায় একটি জিডি করা হয়। এর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর জসিম উদ্দিন (২০) ও সুমন আলী (২৪) নামে জয়ের দুই বন্ধুকে আটক করে পুলিশ।
আটকরা নগরীর একটি খাবারের হোটেলে কাজ করতেন। আটকের পর তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে লাশ উদ্ধার করা হয়। আটক করা হয় রাজিব হোসেন (২৪) নামে আরও এক বন্ধুকে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে শাহমখদুম থানার উপকমিশনার (ডিসি) হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, জসিম ও সুমন নিহত জয়ের অটোরিকশায় চড়ে গোদাগাড়ী যান। এরপর তারা রাজিবকে মাদকদ্রব্য নিয়ে আসতে বলেন। রাজিব তাদেরকে মাদক সরবরাহ করলে তারা ঘটনাস্থলে বসে সেবন করেন। এরপর রাজিব চলে গেলে সুমন নেশায় বিভোর অটোচালক জয়ের পা দুটি চেপে ধরেন। এ সময় আসামি জসিম তার গলায় ছুরি চালান। তবে হঠাৎ সেখানে আবার রাজিব ফিরে এসে ঘটনাটি দেখে ফেলেন।
পরে তাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে গেলে তিনজন মিলেই লাশটি জঙ্গলে ফেলে পালিয়ে আসেন। তারা জয়ের অটোরিকশাটি নাটোরে নিয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন। সেখান থেকে অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয় বলে জানান ডিসি।
ডিসি হেমায়েতুল ইসলাম ইসলাম আরও বলেন, তারা সন্দেহ করছেন গ্রেফতার তিন যুবক অটোরিকশা চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। শাহমখদুম থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ জানান, এ ঘটনায় নিহত জয়ের বাবা আরফান আলী বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে থানায় হত্যামামলা দায়ের করেছেন। শুক্রবার দুপুরে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় আদালতে তাদের রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি।
এদিকে আসামিদের কঠোর শাস্তির দাবিতে বুধবার বিকালে নগরীর আমচত্বর এলাকায় মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। মানববন্ধনে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদাত হোসেন শাহুসহ এলাকার লোকজন বক্তব্য দেন। তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। এই মানববন্ধনের পর আসামি জসিমের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
বিভাগীয় সংবাদ
0 facebook: