শুক্রবার ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের করিমপুর (দোসরী) এলাকায় কাজী অ্যান্ড কোং ব্রিকফিল্ডে কয়লার ট্রাক উল্টে ১৩ শ্রমিকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। আহত হন আরও তিনজন।
এ সময় শ্রমিকরা ভাটার শেডে ঘুমিয়ে ছিলেন। নিহত সবার বাড়ি নীলফামারী জেলার জলঢাকায়। দুর্ঘটনার কারণ বের করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- জলঢাকা উপজেলার নিজপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. সেলিম (২৮), সুরেশ চন্দ্র রায়ের ছেলে রঞ্জিত চন্দ্র রায় (৩০), কামিক্ষ্যার ছেলে অমিত চন্দ্র রায় (২০), কিশোর চন্দ্র রায়ের ছেলে শংকর চন্দ রায় (২২), রামপ্রসাদের ছেলে বিপ্লব (১৯), সুনীল চন্দ্র রায়ের ছেলে তরুণ চন্দ্র রায় (২৫), অমল চন্দ্র রায়ের ছেলে প্রশান্ত রায় দিপু (১৯), পাঠানপাড়া গ্রামের ফজলুল করিমের ছেলে মাসুম (১৮), নূর আলমের ছেলে মোরসালিন (১৮), শিমুলবাড়ি গ্রামের দ্বিনেশ চন্দ রায়ের ছেলে মৃণাল চন্দ্র রায় (২১), একই গ্রামের মনোরঞ্জন চন্দ্র রায় (১৯), রাজবাড়ি গ্রামের ধলু চন্দ্র রায়ের ছেলে কনেক চন্দ্র রায় (৩৫) ও একই গ্রামের খোকা চন্দ রায়ের ছেলে বিকাশ চন্দ্র রায় (২৮)।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, কাজ শেষে রাতে ব্রিকফিল্ডের লেবার শেডে ২২ জন শ্রমিক ঘুমিয়েছিলেন। ভোর ৫টার দিকে ব্রিকফিল্ডের জন্য সিলেট থেকে আনা একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-০১১৪) থেকে কয়লা আনলোড করার সময় হঠাৎ সেটি উল্টে লেবার শেডের ঘুমন্ত শ্রমিকদের ওপর পড়ে। এতে কয়লা বোঝাই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই ১২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। মারাত্মক আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।
ওসি আরও জানান, দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের পর প্রত্যেকের লাশ নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। ট্রাকের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ব্রিকফিল্ডের পরিচালক এনায়েত হোসেন সোহেল পলাতক রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। আজ শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ১ লাখ টাকা ও আহতদের প্রত্যেককে ৫০হাজার টাকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হল।
খবর বিভাগঃ
কুমিল্লা
দুর্ঘটনা
বিভাগীয় সংবাদ
0 facebook: