07 July 2019

হিজাব পরায় কানাডায় শিক্ষকতা বন্ধ মালালা’র


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ 'একজন শিক্ষক, একজন শিশু, একটি বই এবং একটি কলম পৃথিবীটা বদলে দিতে পারে’ স্লোগানে পৃথিবীর বহু মানুষের মন জয় করে ফেলেছিলেন পাকিস্তানি কিশোরী মালালা ইউসুফজাই। এটাই তাকে এনে দিয়েছিল নোবেল শান্তি পুরস্কার।

তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর, এখন তিনি ২১ বছর বয়সী তরুণী। পাকিস্তানে মৌলবাদীদের রক্তচক্ষুর শাসনাধীন জীবন ছেড়ে ব্রিটেনের মুক্ত হাওয়ায় স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন।

সেই সঙ্গে একজন শিক্ষা প্রচারক হিসেবে এরই মধ্যে মালালা কাজ শুরু করেছেন। বিশেষ করে নারীশিক্ষা প্রসারের ব্যাপারে। কিন্তু সেই কাজেই এবার বাধার মুখে পড়লেন নোবেলজয়ী এই তরুণী।

কানাডার কুইবেকে শিক্ষা প্রচারক হিসেবে এতদিন কাজ করতেন মালালা ইউসুফজাই। কিন্তু সম্প্রতি কুইবেকের শিক্ষাদপ্তর একটি বিতর্কিত আইন পাশ করেছে, যাতে উল্লেখ রয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় চিহ্নযুক্ত কোনো কিছু সঙ্গে রাখা চলবে না।

পুলিশ কর্মকর্তা, আইনজীবী এবং শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য। মালালা নিয়মিত হিজাব পরেন, যা ইসলাম ধর্মের অন্যতম চিহ্ন। সেভাবেই তিনি কুইবেকে পড়াতে যেতেন। ফলে নতুন আইন অনুযায়ী, কুইবেকে তার পড়ানো নিষিদ্ধ।

এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে কুইবেক শিক্ষা দপ্তর। এমন আইনে খুশি নন অনেকেই। যদিও কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রী জঁ ফ্রাঁসোয়া রবার্জের যুক্তি, ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্যই এই আইনটি পাস করানো হয়েছে।

এসবের মাঝে আবার সেই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেই মালালার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যা বিতর্ক বাড়িয়েছে। জানা গেছে, আইনটি পাস হওয়ার পর তিনি ফ্রান্সে সফরে মালালার সঙ্গে দেখা করেন। সে সময় মালালাও ফ্রান্সেই ছিলেন। দু’জনের ছবি তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন।

রবার্জের টুইটারে সেই ছবি দেখে সাংবাদিকরা স্বভাবতই তার কাছে জানতে চান, আচমকা কুইবেকে মালালার পড়ানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া কী? তাতে বেশ সপ্রতিভভাবে মন্ত্রী জানান, আমি তাকে জানিয়েছি যে কুইবেকে তিনি পড়ালে আমরা সম্মানিত হব। কিন্তু যে কোনো উদার, সহিষ্ণু দেশে শিক্ষকরা কোনো ধর্মচিহ্ন সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন, এরকম কোনো উদাহরণ নেই।

এর মাধ্যমেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন, কুইবেকে পড়াতে হলে মালালাকে হিজাব ছেড়েই যেতে হবে। এ নিয়ে অবশ্য নোবেলজয়ী মালালার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


শেয়ার করুন

0 facebook: