10 July 2019

নবজাতক কোলে নিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে ১৩ বছরের নাদিয়া


জেলা প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নবজাতককে কোলে নিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ১৩ বছরের বালিকা নাদিয়া। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা অডিটরিয়ামে বাচ্চা কোলে নিয়েই তার বিয়ে হয়।

বর প্রবাসে থাকায় টেলিফোনের মাধ্যমে করা হয়েছে সব আনুষ্ঠানিকতা। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও এলাকার ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে এ বিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম।

বুধবার বিকালে গণমাধ্যমকে ইউএনও জানান, যে ছেলেটি এই শিশুর বাবা তার সাথেই বিয়ে দেয়া হয়েছে। কাবিন ১০ লাখ আর নবজাতকের নামে ২ শতাংশ জমি লিখে দেয়। মেয়েটি ন্যায়বিচার পেয়েছে বলে মন্তব্য তার।

জানা যায়, বছর খানেক আগে ভোলাবো এলাকার সালাউদ্দিন ভূইয়ার ছেলে মোবারকের সঙ্গে নাঈম মিয়ার বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে নাদিয়া আক্তারের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এসময় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক করেন মোবারকে। এতে নাদিয়ার গর্ভবতী হয়ে পড়ে। এরপর থেকেই নাদিয়াকে অস্বীকার করতে শুরু করেন মোবারক।

এরপর একপর্যায়ে সামাজিক চাপে বিদেশে পালিয়ে যান মোবারক। গত শুক্রবার একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই নাদিয়া। এ অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ের মাধ্যেমে নবজাতক কন্যা ফিরে পায় তার পিতার পরিচয়।

নাদিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সন্তান জন্ম দেওয়ার পর মেয়ের বাবা নাঈম মিয়া ছেলেটিকে ফোনে তার মেয়েকে বিয়ে করার কথা জানালে ছেলের পরিবার বিষয়টি স্বীকার করে। বিচারের আশায় পাঁচদিন স্থানীয়দের কাছে ঘুরেও বিষয়টির উপযুক্ত কোনো সমাধান পাননি নাদিয়ার বাবা। পরে নাঈম মিয়া রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগমের কাছে নবজাতকের পিতৃপরিচয় পেতে বিচার দাবি করেন।

পরে ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটুর সহযোগিতা নিয়ে ইউএনও বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারকে নোটিশ করেন। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে ১০ লাখ টাকা কাবিন ও নবজাতকের নামে দুই শতক জমি লিখে দেওয়ার চুক্তি সাপেক্ষে প্রবাসী মোবারকের সাথে ভিডিও কলে নাদিয়ার বিয়ে হয়।

বিয়ের শাড়ি, কাবিনের ফি ও বিভিন্ন খরচ ইউএনও নিজেই বহন করেন। বিষয়টির সুষ্ঠ ও সামাজিকভাবে সমাধান হওয়ায় স্থানীয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওমর ফারুক ভূইয়া, ভোলাব ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু প্রমুখ।


শেয়ার করুন

0 facebook: