18 February 2018

মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ৬০০ একর জমিতে জোরপূর্বক নতুন পুলিশ রেজিমেন্ট গড়ছে


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মিয়ানমার সরকার মায়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের বুথিডং শহরের সীমান্তে রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ৬০০ একর জমি জোরপূর্বক দখলে নিয়ে সেখানে নতুন এক পুলিশ রেজিমেন্ট নির্মাণ করছেদখলকৃত এসব জমির মালিক আলে ছাউঅং গ্রামের রোহিঙ্গা মুসলিমরা বলে শুক্রবার একটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে মিয়ানমারের দৈনিক ইরাওয়ার্দি

দেশটির অন্তত দুজন পুলিশ কর্মকর্তা বিতর্কিত এ প্রকল্পের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেনতাদের একজন মংডু জেলার কর্মকর্তা ও অন্যজন ইয়াঙ্গুনের, যিনি সীমান্ত পুলিশ বাহিনীতে দীর্ঘদিন কাজ করেছেনপুলিশ রেজিমেন্ট নির্মাণের এ প্রকল্প শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা দেখভাল করছেন বলে বিস্তারিত তথ্য দিতে অস্বীকার করেন ওই দুই পুলিশ সদস্য

বুথিডংয়ের মুসলিম সরকারি কর্মকর্তা ইউ তুন তাহার (পরিচয় না প্রকাশের স্বার্থে পরিবর্তিত নাম) বলেন, আলে ছাউঅং গ্রামটি বুথিডং শহর থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের পথ এবং বুথিডং-নায়াউং ছাউঅং হাইওয়ের খুব কাছেগ্রামটিতে ৭০০ পরিবারের বাসরোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হামলায় তাদের অধিকাংশ বাড়ি পুড়ে গেছেআগস্ট মাসের ওই অভিযানে আতঙ্ক-ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গাএ সময় গ্রামটির প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা বাংলাদেশে চলে এসেছেনমিয়ানমারের নতুন পুলিশ রেজিমেন্ট নির্মাণে ব্যবহৃত জমি বৈধভাবে নেয়া হয়েছে নাকি দখল করা হয়েছে- বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি ইরাওয়ার্দিরাথেডং শহরের বাসিন্দা আবদুল ওয়াহিদ বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে পুলিশ ঘাঁটি নির্মাণের জন্য ওই এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছেএসব ধানের জমি দখলে নিয়েছে মিয়ানমারের পুলিশ বাহিনীইরাওয়ার্দি বলছে, নির্মাণস্থলে বুলডোজার ও ট্রাক নেয়া হয়েছে

রাখাইনে রোহিঙ্গা নিপীড়নে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকারাখায় দেশটির এক জেনারেলের ওপর অবরোধ আরোপ করেছে কানাডাশুক্রবার মেজর জেনারেল মং মং সোয়ের ওপর অবরোধের তথ্য নিশ্চিত করেছেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিসটিয়া ফ্রিল্যান্ডঅবরোধের কারণে কানাডায় কোনো অর্থ লেনদেন বা সেখানে ভ্রমণ করতে পারবেন না তিনিজব্দ করা হবে সেখানে থাকা তার সব ব্যাংক অ্যাকাউন্টক্রিসটিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে আর মেজর জেনারেল মং মং সোয়ে ছিলেন এ নিপীড়নের অন্যতম নেতাএক বিবৃতিতে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া এই মানবতাবিরোধী অপরাধে কানাডা নীরব দাঁড়িয়ে দেখতে পারে নাআমরা রোহিঙ্গা এবং অধিকার ও সম্মানের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়া সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর পাশে সহমর্মিতা নিয়ে দাঁড়াব

এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এখনও দেশে ফিরে যাওয়ার মতো উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে জাতিসংঘসংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের যে বাড়ি থেকে উৎখাত করা হয়েছিল, সেই বাড়িতে ফিরে যেতে দিতে হবেঅবশ্যই তাদেরকে কোনো আশ্রয় শিবির বা ক্যাম্পে রাখা চলবে নাএ ছাড়া আরও অনেক শর্ত এখনও পূরণ করা হয়নিশুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে দুজারিক বলেন, প্রত্যাবাসনের পরিবেশ এখনও তৈরি হয়নিপ্রত্যাবর্তন হতে হবে স্বেচ্ছায় এবং বিদ্যমান আইনের আওতায়


শেয়ার করুন

0 facebook: