18 July 2019

মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে হরেকৃষ্ণ পাঠ করানো ‘অন্যায়’: হাইকোর্ট


স্টাফ রিপোর্টার॥ ইসকন নামের উগ্রপন্থী হিন্দুদের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে প্রসাদ খাইয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীদের হরে কৃষ্ণ হরে রামমন্ত্র পাঠ করিয়ে থাকে। এ ঘটনাকে অন্যায়বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।

কয়েকটি অনলাইন ও দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন  হাইকোর্টের নজরে আনা হলে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

ঢাকার রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষে থেকে প্রতিবেদনটি মহামান্য আদালতের নজরে আনেন বিজ্ঞ আইনজীবী মুহম্মদ তৈমুর আলম খন্দকার। এসময় তিনি দৈনিক ইনকিলাবের অফলাইনে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদন আদালতে পড়ে শোনান এবং বলেন, এক ধর্মের রীতি-নীতি অন্য ধর্মের মানুষের ওপরে চাপিয়ে দেওয়া আমাদের সংবিধান সমর্থন করে না।

তখন হাইকোর্ট বলেন, ‘একটি এনজিও কোনও স্কুলে খাবার বিতরণ করতে পারে। কিন্তু জোর করে বা প্রলোভন দেখিয়ে যদি প্রসাদ খাইয়ে মন্ত্র পাঠ করিয়ে থাকে, তবে সেটা অন্যায়।

হাইকোর্ট আরও বলেন, ‘আমরা কোনও ধর্মীয় বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চাই না। এর আগেও শবে বরাত নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও রাজারবাগ দরবারের মধ্যেকার ভুল বোঝাবুঝির ব্যপারেও আমরা হস্তক্ষেপ করিনি। আপনারা (আইনজীবীরা) যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিন। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি আছে, স্থানীয় প্রশাসন আছে, তাদেরকে বলুন।

এ পর্যায়ে আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, ‘আদালত আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল। আমরা আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাবো। সেখানে প্রতিকার না পেলে আবারও আপনাদের (আদালত) কাছে আসতে হবে।

প্রসঙ্গত, দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) প্রসাদ খাইয়ে স্কুলে শিক্ষার্থীদের হরে কৃষ্ণ হরে রাম মন্ত্র পাঠশিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের প্রসাদ খাওয়ালো আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ-ইসকন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী ফুড ফর লাইফকর্মসূচির আড়ালে গত ১১ জুলাই থেকে চট্টগ্রাম নগরীর প্রায় ৩০টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। ইসকন কর্মীদের শেখানো মতে, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা হরে কৃষ্ণ হরে রামমন্ত্র পাঠ করে এ প্রসাদ গ্রহণ করে। শ্লোক-মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রসাদ গ্রহণে উৎসাহিত করায় অনেক শিক্ষার্থী তা গ্রহণে অস্বীকৃত হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের নজিরবিহীন কর্মসূচিতে বিক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।


শেয়ার করুন

0 facebook: