ইহুদী ও কাদিয়ানীদের সাথে আব্দুর রশিদ |
আমেরিকান-ইউরোপীয় এনজিও কর্মীদের সাদা গায়ের রং দেখে অনেকেই হয়ত ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুজতে পারি। কিন্তু এটা তো গেলো রোহিঙ্গাদের নিয়ে সম্রাজ্যবাদীদের এক হাত (ডেমোক্র্যাট)।
কিন্তু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে জাতিগত বিদ্বেষ প্রচার হচ্ছে, এর পেছনে যে সম্রাজ্যবাদীদের আরেকটা হাত আছে, সেটা আমরা বুঝতে পারি না।
অর্থাৎ সম্রাজ্যবাদীদের দুই হাত- এক হাত দিয়ে তৈরী করে, অন্য হাত দিয়ে দমন করে। এই দুই হাত পলিসি বুঝানোর জন্য আমি ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান এই দুই আলোচনা নিয়ে আসি।
(২০১৭ সালে ২৫শে আগস্ট রোহিঙ্গা গণহত্যার মাত্র ৭ দিন পর ৩রা অক্টোবর আমি আমেরিকার দুই হাত নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম-https://bit.ly/2LfreR0)
অতি সম্প্রতি রোহিঙ্গা জাতিগত বিরোধী প্রচারণা যে বেশ হাওয়া প্রকাশ পেলো, তা দেখে জনগণও খুব লাফ দিলো। আমি তাদেরকে বুঝাতে চাইছি- রোহিঙ্গাদের পেছনে পশ্চিমা এনজিওতে যেমন একহাতের ষড়যন্ত্র আছে, তেমনি রোহিঙ্গাবিরোধী প্রচারণার মধ্যেও অন্যহাতের ষড়যন্ত্র আছে।
সেই অন্যহাতটা খোজার জন্যই এ পোস্ট।
সম্প্রতি রোহিঙ্গা সমাবেশের পর যাদের গায়ে সবচেয়ে বেশি চুলকানি উঠেছিলো তাদের মধ্যে ১ জন হলো মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ।
তার বক্তব্য নিয়ে দৈনিক যুগান্তর ২৭শে আগস্ট একটা রিপোর্ট করে, যার শিরোনাম- “রোহিঙ্গা শোডাউনঃ দেশ অস্থির করার ষড়যন্ত্র”।
সেই খবরে কথিত নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ বলে-“ রোহিঙ্গাদের শোডাউন ছিল বাংলাদেশের জনগণকে জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা।” (https://bit.ly/324Ru7o)
আপনাদের মনে থাকার কথা- আজ থেকে ৭ দিন আগে আমি একটা স্ট্যাটাসে বলেছিলাম, আওয়ামীলীগের মধ্যে কিছু লোক প্রবেশ করে যারা আসলে আওয়ামীলীগ না, কিন্তু তারপরও তাদের শেখ হাসিনা অনেক সুযোগ সুবিধা দিয়ে পুরষ্কৃত করে। আমি বলেছিলাম, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে এ লোকগুলোকে আমার রিপাবলিকান ব্লকের মনে হয় (আমার নিজস্ব বিশ্লেষণে দেয়া নাম)।
এর মধ্যে ৭ নম্বরে এই মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রশিদের নাম দিয়েছিলাম। (https://bit.ly/2L5BqN6)
মেজর জেনারেল (অবঃ) আব্দুর রশিদ নামক লোকটাকে আমার খুব সন্দেহজক মনে হয়।
উল্লেখ্য বাংলাদেশে গত নির্বাচনের মাত্র ১ মাস আগে একটা খবর আসে, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ১৪৭ জন সেনা কর্মকর্তা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে।
(https://bit.ly/30UsH5y)
এই ১৪৭ জনের মধ্যে মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ ছিলো। যারা টক শো দেখেন, তাদের জন্য এই মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ খুব কমন ফেস। আবদুর রশিদদের কাজ হলো সারাদিন জঙ্গী জঙ্গী করা (রিপাবলিকান ব্লকের স্বভাব)। মনে হবে মুসলমানরা মনে হয় সারাদিন কৃষিক্ষেতে জঙ্গী চাষ করে, এছাড়া বোধ হয় মুসলমানদের আর কোন কাজ নাই।
এরা সভা সেমিনার করে, টক শো সারাদিন বাংলাদেশ জঙ্গীবাদের হুমকিতে আছে সেই মেসেজটাই দিতে চায়।
এই মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদ ২০১৫ সালে বলেছিলো- “সেনাবাহিনীর মধ্যে জঙ্গিদের ছাঁকনি দিয়ে বের করার সময় এসেছে”। (https://bbc.in/2ZtwdCE) এদের বিশ্বাস বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রচুর জঙ্গী অনুপ্রবেশ করেছে, এদের বের করতে হবে।
আপনাদের মনে থাকার কথা, ২০১৭ সালে সুবির ভৌমিক নামক এক ভারতীয় সাংবাদিক মিথ্যা প্রচার করেছিলো- শেখ হাসিনার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এসএসএফ সদস্যদের মধ্যে নাকি জঙ্গী আছে, যারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো। (https://bit.ly/2Zn8Pvu) ঐ সময় সুবির ভৌমিককে অনেকে ভারতের র’ এর সদস্য বলে।
আমার ধারণা- এই গ্রুপটা হলো রিপাবলিকান ব্লকের সদস্য, যারা ভারতের থাকলে রিপাবলিকান সদস্য মোদির সাথে থাকে, আর বাংলাদেশেরও জঙ্গীবিরোধী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক নাম দিয়ে থাকে। এরা সব সময় ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপের কথা বেশি বলে। এরাই সব সময় প্রচার করে – বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রচুর জঙ্গী আছে।
সত্যিই বলতে বাংলাদেশে সেনাবাহিনীর মধ্যে একটা বড় চায়না ব্লক আছে। এবং সেটা বেশ শক্তিশালী অবস্থানেই আছে। সম্ভবত ঐ চায়না ব্লকের আর্মি সদস্যদের টার্গেট করে রিপাবলিকান ব্লক জঙ্গী ট্যাগ দেয়।
সম্প্রতি দেশের সার্বিক নিরাপত্তার সার্থে ‘জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল’ নামক একটি কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে পত্রিকায় দেখলাম, এই কাউন্সিলের গুরুত্ব নিয়ে মেজর জেনারেল আবদুর রশিদের মত লোকগুলো খুব উৎসাহ দেখাচ্ছে। (https://bit.ly/32dfW6s)
আমার চিন্তা হচ্ছে, সরকার নিরাপত্তা কাউন্সিলের নাম দিয়ে এই রিপাবলিকান ব্লক সদস্যদের নিয়ে কোন কমিটি করে দেয় কি না। তাহলে হয়ত দেখা যাবে, এদের অতি প্রচারণার কারণে বাংলাদেশের ১ নম্বর সমস্যা প্রচার করা হবে কথিত জঙ্গী সমস্যা। তখন সবাই একসাথে দেশ এগিয়ে নেয়া তো পরের কথা, জঙ্গীবাদের কল্পকথা শুনিয়ে পুরো দেশকে পিছন থেকে লাগাম পড়িয়ে দেয়া হবে।
তবে মেজর জেনারেল (অবঃ) আবদুর রশিদের যে জিনিসটা আমাকে সবচেয়ে ভাবায়, তাহলো তার কাদিয়ানী কানেকশন। সে ঢাকায় কাদিয়ানীদের মেইন সেন্টারে যাতায়াত করে (সাথে মুরগী কবিরকেও নিয়ে যায়)। এছাড়া কাদিয়ানীদের কোন কনফারেন্স হইলে তাকে স্টেজে বসতে দেয়। এমনকি নেদারল্যান্ডে সে কাদিয়ানীদের মসজিদের গেলে কাদিয়ানীরা তাকে পুরস্কৃত করে।
তাকে নিয়ে সংগ্রহ করা অনেকগুলো ছবি দিলাম, দেখতে পারেন। প্রথম ছবিতে দেখছেন ইহুদী জ্যাকবের পায়ের নিচে বসে সে বেশ গর্বিত। (চলবে)
খবর বিভাগঃ
নয়ন চ্যাটার্জি
মতামত
রোহিঙ্গা
0 facebook: