আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। অবশেষে ভারতের অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের জায়গায় মন্দির গড়ার জন্যই রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। মন্দির গড়ার জন্য সরকারকে একটি ট্রাস্ট গঠন করতেও বলা হয়েছে।
তবে অযোধ্যাতেই অন্যত্র একটি মসজিদ গড়ার জন্য সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় ভারতের শীর্ষ আদালতে পাঁচ সদস্যের একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে এই রায় দিয়েছে।
আদালতের এমন বিতর্কিত রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিতে শুরু করেছেন অনেকে। যে কারণে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ রাজ্যের অন্তত ৯০ মুসলিমকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১০ নভেম্বর) ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’ জানিয়েছে, শনিবার রায় ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া নজরদারি করছে পুলিশ। রায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ায় মোট ১২টি এফআইআরে ৩৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা বাবরি মসজিদ মামলার রায় সম্পর্কিত ৩ হাজার ৭১২টি পোস্টের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে বেশকিছু পোস্ট এরই মধ্যে মুছে দেওয়া হয়েছে। এমনকি বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে অনেক অ্যাকাউন্ট।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারির পাশাপাশি খোলা হয়েছে প্রযুক্তি নির্ভর কন্ট্রোল রুমও। মূলত সেখানে বসেই অযোধ্যাসহ গোটা রাজ্যের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মকর্তারা।
এর আগে গত ১৬ অক্টোবর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের একটি যৌথ বেঞ্চ অযোধ্যা জমি বিতর্কের শুনানি সম্পন্ন করেন। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে সে সময় আর রায় ঘোষণা করা হয়নি।
যদিও তখন থেকেই গুঞ্জন উঠছিল আগামী ১৭ নভেম্বর অবসরে যেতে পারেন রঞ্জন গগৈ। যে কারণে এর আগেই যেকোনো দিন ঐতিহাসিক এই মামলাটির রায় হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছিল। মূলত এসব বিষয় বিবেচনা করেই অতি স্পর্শকাতর মামলার রায় ঘোষণার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে প্রশাসন।
এ দিকে গত শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাতে প্রধান বিচারপতি গগৈ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এমনকি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গেও তার বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মূলত সেই বৈঠকেই গগৈ অন্য বিচারকদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তিনি অযোধ্যা মামলায় রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেন।
অপর দিকে রায় ঘোষণার পর রাজ্যটিসহ গোটা ভারতে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয় সে জন্য এরই মধ্যে গোটা দেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সব রাজ্যে বিশেষ সতর্কতাও জারি করতে বলা হয়েছে।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
ভারত
হিন্দু সমাচার
0 facebook: