সিলেট প্রতিনিধিঃ সিলেটের জুড়ীতে অনৈতিক কাজে বাঁধা দেয়াকে কেন্দ্র করে হামলা পাল্টা হামলায় একজন মুসলিম মুক্তিযোদ্ধা নিহত ও উভয় পক্ষের ৮জন এবং পথচারীসহ প্রায় ৩০ আহত হয়েছেন। এই নৃশংস ঘটনাটি বুধবার সকালে মৌলভীবাজার জেলার, জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ি ইউনিয়নের জামকান্দি গ্রামে ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে
জানা যায়, জামকান্দি গ্রামের জনৈক জমির মিয়া গত সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় সোনারূপা চা
বাগানের বাসিন্দা শ্রমিক হরিলালের সাথে দেখা করতে তার বাড়ীতে যান। এ সময় হরিলাল
বাড়ীতে না থাকায় তার স্ত্রীর সাথে বাগান শ্রমিক স্বপনের ছেলে সঞ্জুকে অনৈতিক কাজে
দেখতে পেয়ে তিনি তাকে বাঁধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্জু হাতে থাকা লাইট দিয়ে জমিরের
উপর হামলা করলে তার মাথা ফেটে যায়। স্থানীয়রা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে
জুড়ীতে একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। জমির মিয়া সেখানে চিকিৎসাধীন
থাকাবস্থায় মঙ্গলবার সঞ্জু নিজেই নিজের ঘর ভেঙ্গে জমিরের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা
করে। এই ঘটনায় জমিরের দুই আত্মীয় বুধবার সকালে সোনারতন নামক এক শ্রমিকের সাথে
ঘটনার ব্যপারে কথা বলতে গেলে তাদের মধ্যে বাক বিতণ্ডা শুরু হয়, এক পর্যায়ে সোনারতন
চিল্লাচিল্লি করে উগ্র বাগানি হিন্দুদের জড়ো করে বাগানে পাগলা ঘন্টি বাজিয়ে ৪/৫শত
শ্রমিক কে দা, চিয়াড়ীসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করে স্থানীয়
মুসলমানদের উপর সশস্ত্র হামলা করে পশ্চিম জামকান্দি পবিত্র জামে মসজিদে ইট পাটকেল
নিক্ষেপ করে। সেই সাথে জোর করে ৬/৭টি গরু নিয়ে যায়।
এদিকে উগ্রপন্থী
বাগানি হিন্দুদের হামলার ঘটনা মসজিদে মাইকে ঘোষণা দিলে মুসল্লীরাও জড়ো হতে থাকেন। খবর
পেয়ে জুড়ী থানার পুলিশ এবং অতিরিক্ত পুলিশ নিয়ে কুলাউড়া সার্কেলের এএসপি ঘটনাস্থলে
গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। শ্রমিকদের হামলায় মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন মিয়া (৬৫),
তাঁর
পুত্র শাহিন (৩৫), লিমন (১৮), হেলাল মিয়া (৪০),
কাশেম
মিয়া (৪০) ও আব্দুল আলী (৪০) আহত হন। এছাড়া হামলায় উগ্রপন্থী হিন্দু শ্রমিকদের
ছুড়া চিয়াড়ীর ভয়ে জামকান্দি-দক্ষিণভাগ সড়কের পথচারী ও যাত্রীরা প্রাণরক্ষার্থে
দৌড়াদৌড়ি শুরু করলে হুচট খেয়ে পড়ে গিয়ে আরও ২০/২৫জন আহত হন। আহতদের দক্ষিণভাগ,
জুড়ী,
কুলাউড়া
ও সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, বর্তমানে তারা সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তবে উগ্রপন্থী
হিন্দু শ্রমিকদের ছুড়া চিয়াড়ীর আঘাতে মারাত্মক আহতাবস্থায় মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন মিয়া,
শাহিন
ও লিমনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হলে সেখানে
চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে তিনটায় মুক্তিযোদ্ধা ইয়াছিন মিয়া মারা যান এবং
শাহিনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা যায়। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত (বিকাল ৫টা) থানায়
কোন মামলা হয়নি। জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ভাইস
চেয়ারম্যান, এএসপি সার্কেল (কুলাউড়া) সহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ
এলাকায় অবস্থান করে উভয়পক্ষকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেন।
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
ধর্মীয় বিদ্বেষ
বিভাগীয় সংবাদ
মৌলভীবাজার
সিলেট বিভাগ
0 facebook: