25 June 2018

সুলতান এরদোয়ানকে নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এবং তার জাস্টিজ এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির নির্বাচনী সাফল্য ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে কাভারেজ পেয়েছে

শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি নিউজ, দ্য স্কাই নিউজ এবং দ্য গার্ডিয়ানে তুর্কি প্রেসিডেন্সিয়াল ও পার্লামেন্টারি নির্বাচনের বেসরকারি ব্যাপক গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে

বিবিসির খবরে এরদোয়ানকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘তুরস্কের ক্ষমতায় দীর্ঘদিন ধরে অধিষ্ঠিত নেতা রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে প্রথম রাউন্ডে সরাসরি জয়লাভ করেছেন

এতে আরো বলা হয়, প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে এরদোয়ান ৫৩ শতাংশ ভোট পেয়েছেনঅন্যদিকে, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররেম ইনস পেয়েছেন ৩১ শতাংশ ভোট

দ্য গার্ডিয়ানের খবর বলা হয়, ‘তুরস্কের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান জয়লাভ করেছেন বলে তিনি দাবি করেছেনকিন্তু এখনো পর্যন্ত সব ভোট গণণা না হওয়ায় বিরোধীরা পরাজয় স্বীকার করেননি

স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়, আনফিসিয়াল ফলাফল অনুযায়ী তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসাবে এরদোয়ান পুনরায় ফিরছেন বলে বলে জানিয়েছেন

এতে বলা হয়, ‘কিন্তু প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৮ জুলাই দ্বিতীয় দফা নির্বাচন এড়ানোর জন্য এরদোয়ান এখনো প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ পাননি

এর আগে রবিবার প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তুরস্কের ঐতিহাসিক প্রেসিডেন্ট ও সংসদীয় নির্বাচনে তার সাফল্য ঘোষণা করেন

রবিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ৯৭.৭ শতাংশ ব্যালট গণনা শেষে এরদোয়ান ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছেনতুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়কোনও প্রার্থী যদি প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তবে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন হয়

সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন দ্বিতীয় দফায়প্রথম দফা নির্বাচনের পনের দিন পর অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় দফা নির্বাচনযদিও ইতোমধ্যেই পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে গেছেন এরদোয়ানতাই দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনও প্রয়োজন হবে না

গত বছর অনুষ্ঠিত গণভোটে সাংবিধানিক পরিবর্তনের পক্ষে রায় আসার পর রবিবার প্রথমবারের মতো একযোগে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোট দেয় তুর্কি জনগণ

ওই গণভোটে দেশের সংসদীয় ব্যবস্থাকে নির্বাহী প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থায় পরিণত করার পক্ষে রায় এসেছিলনতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী, পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে এরদোয়ান উল্লেখযোগ্য নির্বাহী ক্ষমতা পাবেনএমনকি প্রধানমন্ত্রীর পদ বিলুপ্ত করতে পারবেন তিনিনির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে পার্লামেন্টের মনিটরিং করার ভূমিকাও বাতিল করার ক্ষমতা থাকবে এরদোয়ানের হাতে

২০০৩ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিন মেয়াদে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এরদোয়ান২০১৪ সালেই তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হনএর আগে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ইস্তাম্বুলের মেয়র ছিলেনতার প্রধান সমর্থক হচ্ছেন রক্ষণশীল এবং ধার্মিক অপেক্ষাকৃত বয়স্ক তুর্কিরা

এরদোয়ান কেন এত জনপ্রিয়
আরো এক মেয়াদে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রজব তাইয়েব এরদোয়ানরোববারের নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছেন তিনিএকই দিন অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে তার দলদীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোয়ান প্রেসিডেন্সির সাথে এবার পেতে যাচ্ছেন নির্বাহী ক্ষমতাও

নির্বাচনে জয় নিয়ে যদি আন্তর্জাতিক কোনো প্রতিযোগিতা থাকত, তবে রজব তাইয়েব এরদোয়ান বিশ্বের অবিসংবাদিত, অপরাজিত ও হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হিসেবে পরিচিতি পেতেন

গত বছর তুরস্কের গণভোটে এরদোয়ানের বিজয়ের পর বার্তা সংস্থা এএফপি তাদের এক রিপোর্টে এভাবেই মূল্যায়ন করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্টকে

গত দেড় দশকে ১৪টি নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এরদোয়ানপ্রতিটিতেই জয় পেয়েছেনএর মধ্যে ৬টি পার্লামেন্ট নির্বাচন, ৩টি গণভোট, ৩টি স্থানীয় নির্বাচন ও দুটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

শুধু তুরস্ক নয়, বর্তমান বিশ্ব রাজনীতিতেই সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাদের একজন এরদোয়ানদেশের সীমানা ছাড়িয়ে সারা বিশ্বের মুসলিমদের মাঝেও তিনি অসম্ভব জনপ্রিয়এর কারণ এক সময়ের খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা তুরস্ককে তিনি পাল্টে দিয়েছেন নিজ হাতে

কামাল আতাতুর্ক দেশটিতে সেক্যুলারিজমের নামে ইসলাম চর্চার ওপর চরম আঘাত হেনেছিলেন; কিন্তু এরদোয়ান মানুষকে দিয়েছেন ধর্ম পালনের অবাধ স্বাধীনতাপাশাপাশি বিশ্ব রাজনীতিতেও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছেন উচ্চকণ্ঠেজোরালো ভুমিকা রাখছেন সকল আন্তর্জাতিক ইস্যুতে

১৯৫৪ সালে ইস্তাম্বুলের কাশিমপাশায় জন্ম নেয়া এরদোয়ান ছোটবেলা থেকেই ছিলেন বাস্তবমুখী মানসিকতারবাবা ছিলেন তুর্কি কোস্টগার্ডের ক্যাপ্টেন

পরিবারে স্বচ্ছলতা থাকলেও তরুণ এরদোয়ান নিজের খরচ চালানোর জন্য লেবুর শরবত ও তিলের রুটি বিক্রি করেনমারমারা ইউনিভার্সিটিতে ব্যবসায় প্রশাসনে পড়ার সময় ইসলামী আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন

যোগ দেন কমিউনিজম বিরোধী ন্যাশনাল টার্কিস স্টুডেন্ট ইউনিয়নেফুটবলও খেলতেন স্থানীয় একটি নামকরা ক্লাবেছাত্রজীবন শেষে যোগ দেন নাজিমউদ্দিন আরবাকানের ন্যাশনাল স্যালভেশন পার্টির যুব সংগঠনে

১৯৮০ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দলটি বিলুপ্ত করা হলে আরবাকানের নতুন দল ওয়েলফেয়ার পার্টির সাথে যুক্ত হনএই দল থেকেই ১৯৯৪ সালে নির্বাচিত হন ইস্তাম্বুলের মেয়র

বিশৃঙ্খল আর অনুন্নত ইস্তাম্বুলকে আমূল পাল্টে দেন তিনিকয়েক বছরের মধ্যে ইউরোপের বড় শহরগুলোর সাথে পাল্লা দিতে শুরু করে ইস্তাম্বুলহু হু করে বাড়তে থাকে এরদোয়ানের জনপ্রিয়তাযা তাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে দেশের সর্বোচ্চ পদে

১৯৯৮ সালে সেক্যুলার সরকার ওয়েলফেয়ার পার্টি নিষিদ্ধ করলে বিক্ষোভে অংশ নেন এরদোয়ানবিক্ষোভে একটি কবিতা আবৃত্তির কারণে তার ওপর ক্ষুব্ধ হয় সরকার

কবিতাটি ছিলো, ‘মসজিদ আমাদের ক্যান্টনমেন্ট, গম্বুজ আমাদের হেলমেট, মিনার আমাদের বেয়নেট আর বিশ্বাসীরা আমাদের সৈনিককয়েক মাস জেল খাটতে হয় তাকে, সেই সাথে পড়তে হয় রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে

কেড়ে নেয়া হয় মেয়র পদও২০০১ সালে আবদুল্লাহ গুলসহ কয়েকজন নেতাকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন জাস্টিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি সংক্ষেপে যা একে পার্টি নামে পরিচিত২০০২ সালে প্রথম পার্লামেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েই জয়লাভ করে দলটি

মূলত এরদোয়ানের সুনাম আর জাদুকরী নেতৃত্বই ছিলো দলটির প্রধান পুঁজিরাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে এমপি ও প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি তিনি

২০০৩ সালে এক উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে পার্লামেন্টে আসেন এবং প্রধানমন্ত্রী হনএরপর ২০০৭ ও ২০১১ সালের নির্বাচনেও জয় লাভ করে দলটিতুরস্কের ইতিহাসে প্রথম নেতা হিসেবে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন২০১৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় লাভ করে শপথ নেন তুরস্কের ১২তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে

ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে তার প্রতি জনগনের যে আস্থা তৈরি হয়েছিলো তা ক্রমেই বেড়েছেজনগনের ভালোবাসার প্রতিদান দিতেও দেরি করেননি এই নেতা১৬ বছরের দেশ শাসনে তুরস্ককে তৈরি করেছেন আধুনিক বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্র হিসেবেএকে পার্টি ক্ষমতায় আসার আগে ঋণে জর্জরিত ছিলো তুরস্কের অর্থনীতি

কূটনৈতিক ও সামরিকভাবেও নির্ভরশীল ছিলো পশ্চিমাদের ওপরশুধু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের(আইএমএফ) কাছেই তুরস্কের ঋণ ছিলো ২ হাজার ৩৫০ কোটি মার্কিন ডলারক্রমান্নয়ে সব ঋণ শোধ করে ২০১২ সালে এরদোয়ান ঘোষণা দেন- এবার আইএমএফ চাইলে তুরস্কের কাছ থেকে ঋণ নিতে পারে

২০০২ সালে যে দেশটির কেন্দ্রিয় ব্যাংকের রিজার্ভ ছিলো ২ হাজার ৬৫০ কোটি ডলার, ২০১১ সালে তাই দাড়িয়েছে ৯ হাজার ২২০ কোটি ডলারে

তুর্কি নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান অনেকগুণ উন্নতি হয়েছে তার সময়েশুধু অর্থনীতিই নয় প্রতিটি সেক্টরের রীতিমতো বিপ্লব করেছেন এরদোয়ান

প্রতিটি প্রদেশে কমপক্ষে একটি করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেনএয়ারপোর্টের সংখ্যা ২৬ থেকে নিয়ে গেছেন ৫০-এধর্ম পালনে যে নিষেধাজ্ঞা ছিলো অতীতে তা ধীরে ধীরে তুলে দিয়েছেনঅবাধ স্বাধীনতা দিয়েছেন ধর্ম পালনের

পাশাপাশি মুসলিম কৃষ্টি-সংস্কৃতি সংরক্ষণে নিয়েছেন কার্যকরী উদ্যোগতবে এসব বিষয়ে কোন তাড়াহুড়ো করেননি তিনিতাল মিলিয়ে চলেছেন ইউরোপীয় সমাজ ব্যবস্থার সাথেও

তুরস্ক সফরকালে বারাক ওবামা বলেছিলেন, ‘একজন নেতা কিভাবে একই সাথে ইসলামিক, গণতান্ত্রিক ও সহিষ্ণু হতে পারে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এরদোয়ানআর এমন রাষ্ট্রনেতার প্রতি জনগনের আস্থা না থাকার কী কারণ থাকতে পারে!

৬৪ বছর বয়সী এরদোয়ানের জনপ্রিয়তা কতখানি তার প্রমাণ বিশ্ববাসী দেখেছে ২০১৫ সালের ১৫ জুলাই সেনাঅভ্যুত্থান চেষ্টার সময়শুধুমাত্র তার একটি একটি ভিডিও বার্তার ডাকে সাড়া দিয়ে ট্যাঙ্ক, কামানের সামনে রুখে দাড়িয়েছে নিরস্ত্র জনতারাষ্ট্রনেতাকে কতখানি ভালোবাসলে ট্যাঙ্কের পথ রোধ করতে রাস্তায় শুয়ে পড়ে মানুষ!

তবে হঠাৎ করে এই জনপ্রিয়তা আসেনিসুশাসন, সমৃদ্ধি আর স্বনির্ভরতার স্বাদ যখন পেতে শুরু করেছে তুর্কিরা- তখনই এরদোয়ানের প্রতি বেড়েছে তাদের আস্থাদীর্ঘদিন পশ্চিমা দেশগুলোকে ধর্ণা দেয়ার নীতিতে চলেছে তুরস্ক

কিন্তু এই নীতি পাল্টে জাতিকে মাথা তুলে দাড়াতে শিখিয়েছেন তিনিইউরোপ-আমেরিকার চোখে চোখ রেখেও যে কথা বলা যায় সেটি বিশ্বাস করতে শিখিয়েছেন মানুষকে

পশ্চিমা বিশ্বের প্রবল আপত্তির মুখেও গণভোটে জিতে সংবিধান পাল্টে গ্রহণ করেছেন নির্বাহী ক্ষমতাঅর্থনীতি, কূটনীতির মতো সামরিক শক্তিতেও অনেক এগিয়েছে তুরস্ক

২০১৫ সালে তুর্কি আকাশ সীমায় প্রবেশ করার মাত্র ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে ধ্বংস করা হয় রাশিয়ার যুদ্ধ বিমানযা অসীম সাহসিকাতরই এক নজির

ধীরে ধীরে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছেন এরদোয়াননেতৃত্বহীন মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন প্রতিনিয়তরোহিঙ্গা ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে ও সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশের পাশে দাড়িয়েছে তুরস্ক

জেরুসালেম ইস্যুতে ওআইসির চেয়ারম্যান এরদোয়ান জরুরী সম্মেলন ডেকে পূর্ব জেরুসালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী ঘোষণা করেছেনমুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে চালিয়েছেন ব্যাপক কূটনৈতিক তৎরতা


কাতার সঙ্কটেও মধ্যস্ততার উদ্যোগ নিয়েছেনসব কিছু মিলিয়ে তুরস্ক ও নেতৃত্ব দুটো বিষয়কেই বিশ্বের সামনে রোল মডেল হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন এরদোয়ান


শেয়ার করুন

0 facebook: