01 October 2018

হিজাবে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কাঠগড়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ

প্রতিকি ছবি
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহান্সবার্গ শহরের জিপী গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সাতজন মুসলিম শিক্ষার্থীর পরিবার বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে তাদের মেয়েদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন। তারা এ ব্যাপারে মিমাংসার জন্য দেশটির আদালতে বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন।

গত কয়েক মাস ধরে বিদ্যালয়টি মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরিধান করে বিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এমন খবর সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

কিছুদিন পূর্বে বিদ্যালয়টির সাতজন হিজাবী শিক্ষার্থীকে জানানো হয় যে, তাদেরকে বিদ্যালয়ের পোশাক বিধি ভঙ্গের জন্য নিয়ম নীতি সংক্রান্ত শুনানিতে অংশ গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের প্রতি নিয়ম নীতি সংক্রান্ত নোটিশ জারির পরে ক্লিফে ডেকার নামের স্থানীয় একজন আইনজীবী বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন শুনানিকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন।

ক্লিফে ডেকার নামের ওই আইনজীবী বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি একটি নোটিশ জারি করে বলেছেন যে, শিক্ষার্থীদের প্রতি নিয়মনীতি সংক্রান্ত শুনানির জন্য যে নোটিশ জারি করা হয়েছে তা বৈষম্যমূলক এবং বিদ্যালয়টির ইউনিফরম সংবিধান পরিপন্থী।

ক্লিফে ডেকার বলেছেন, ‘যেসব শিক্ষার্থী তাদের ধর্মীয় পোশাক পরিধান করতে চায় তাদের অধিকার, সম্মান এবং সমতাকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করতে পারে না।’

ক্লিফে ডেকারের ওই নোটিশের পরে স্থানীয় শিক্ষা বোর্ড জিপী গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষার্থীদের হিজাব সম্বলিত ইউনিফরম পরিধান করার অনুমতি দিতে বলেছে।

বিদ্যালয়ের প্রতি জারি করা ওই নোটিশে এমন কয়েকটি লাইন ছিলো- ‘বোধগম্য ব্যাখ্যা হচ্ছে এই যে, বিদ্যালয়টিতে এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যারা শিক্ষার্থীদেরকে অসম্মান প্রদর্শন করতে অভ্যস্ত এবং সেখানে ইউনিফরম নিয়ে একটি সঙ্কট চলমান রয়েছে।’

ক্লিফে ডেকার দ্যা সেটারডে স্টারকে বলেন- ‘বিদ্যালয়টির আচরণ বিধিতে মুসলিম শিক্ষার্থীদেরকে আলাদা করে দেখানো হয়েছে এবং আমার মক্কেল বিদ্যালয়ে তার ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সাথে তারা কিভাবে বিদ্যালয়ের প্রতি তাদের ভালোবাসা আরো বৃদ্ধি করা যায় তা খুঁজে বেড়াচ্ছেন।’

‘আমাদের মক্কেল এখনো বিদ্যালয়ের সাথে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছেন।’
ক্লিফে ডেকার বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে এ ব্যাপারে একটি শুনানি করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি, কিন্তু যদি কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকে তবে তিনি এবং তার মক্কেলের সামনে আদালতে যাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা থাকবে না।

তবে আশার বিষয় হচ্ছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়ম-নীতি সংক্রান্ত শুনানিটি স্থগিত করেছে এবং এ ব্যাপারে একটি তদন্ত আরম্ভ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার একজন সমাজবাদী নেতা ইউসুফ আবরেমজি এক টুইট বার্তায় জানতে চান- মুসলিম শিক্ষার্থীদের কেন চুল ঢেকে রাখার জন্য শাস্তির মুখোমুখি করা হয়েছে?


শেয়ার করুন

0 facebook: