হিন্দুস্থানের মানচিত্র |
রাজীব খাজা।। গাজওয়াতুল হিন্দ হল রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক ভবিষ্যদ্বাণীতে বর্ণীত ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম ও মুশরিক(হিন্দু)দের
মধ্যে ভবিতব্য চূড়ান্ত যুদ্ধ। “গাজওয়া” অর্থ
যুদ্ধ, আর
“হিন্দ” বলতে
এই উপমহাদেশ তথা ভারত-বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্থান-মায়ানমার-শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপ-নেপাল-ভুটান-সিকিম-কাশ্মির-কে
বুঝায়। এবং বর্তমানে এই অঞ্চলের উত্তেজনাকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমাদেরকে সেই গন্তব্যের
দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
বর্ণনা ১: “হযরত
আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যিনি
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের থেকে গাজওয়াতুল হিন্দ তথা ভারতের
জিহাদ সম্পর্কে ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করেন। যদি আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ
উপস্থিত হই এবং শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করি তাহলে আমি হবো সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। আর আমি যদি
সম্মানিত জিহাদ মুবারক থেকে (বিজয়ী বেশে) ফিরে আসি তাহলে আমি [হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু] জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত।”
কিতাব সূত্রঃ- মুসনাদে আহমদ ২/২২৮, মুস্তাদরকে
হাকিম ৩/৫১৪, হিলইয়াতুল
আওলিয়া ৮/৩১৬, আল
বিদায়া ওয়ান নিহায়াহ ৬/২৪৯,
আন নিহায়া ফিল ফিতান ১/৩ ]
বর্ণনা ২: "বিশিষ্ট
ছাহাবী হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যিনি
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের থেকে গাজওয়াতুল হিন্দ তথা
ভারতের সম্মানিত জিহাদ মুবারক সম্পর্কে ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি মুবারক গ্রহণ করেন।
যদি আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক পাই তাহলে আমি সেই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ আমার
পবিত্র জান বিলিয়ে দেবো এবং আমার মাল-সম্পদ ব্যয় করবো। আর আমি যদি সেই সম্মানিত জিহাদ
মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে শাহাদাত মুবারক গ্রহণ করি তাহলে আমি হবো সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ। আর
আমি যদি সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার থেকে (বিজয়ী বেশে) ফিরে আসি তাহলে আমি [হযরত আবূ
হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু] জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত।”
কিতাব সূত্রঃ- নাসাঈ শরীফ, সুনানে
সাঈদ ইবনে মানসূর ২/১৪৫,
মুসনাদে বাযযার ১৫/৩০২, সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ ৪/৩০২, আস সুনানুল
কুবরা লিল বাইহাক্বী ৯/১৭৬]
বর্ণনা ৩: সিহা সিত্তাহ এর অন্যতম কিতাব
“নাসাঈ
শরীফে” কিতবুল
জিহাদ অধ্যায়ে একটা পরিচ্ছদ আছে যার নাম হচ্ছে “গাজওয়ায়ে হিন্দ” বা হিন্দুস্তানের
জিহাদ। এই অধ্যায়ে গাজওয়ায়ে হিন্দের বিষয়ে অনেক গুলো হাদীস শরীফ বর্ণিত আছে।
একটি হাদীস শরীফ হলঃ- "হুযুর
পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার খাদিম হযরত সাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, মহান
আল্লাহ পাক আমার উম্মতদের দু’টি
দলকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করেছেন। আর সেই দুটি দল হচ্ছেন:
১. যাঁরা হিন্দুস্তানের মুশরিকদের বিরুদ্ধে
জিহাদ(গাজওয়ায়ে হিন্দ) করবেন।
২. আর অপর দলটি হচ্ছেন, যাঁরা
হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম আলাইহাস সালাম-এর সাথে থাকবেন।”
কিতাব সূত্রঃ- নাসাঈ শরীফ, কিতাবুল জিহাদ,
বাবু গাজওয়াতুল হিন্দঃ হাদীস নম্বর ৩১৭৫, মুসনাদে আহমদ ৫/২৬৮, আল তারীখুল
কাবীর লিল বুখারী ৬/৭৩,
তাহযীবুল কামাল ৩৩/১৫২, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১০/৮০, মুখতাছারে
তারীখে দিমাশক্ব ৬/৪৬৭]
অন্যদিকে গাজওয়াতুল হিন্দ-এর ভবিষ্যদ্বাণী
ক্বাসীদায়ে শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিতেও পাওয়া যায়ঃ বিখ্যাত ওলীয়ে কামেল
হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আজ থেকে ৮৮৬ বছর পূর্বে হিজরী ৫৪৮ সালে
মোতাবেক খ্রিস্টাব্দ ১১৫২ সালে এক ক্বাসিদা শরীফ (কবিতা) রচনা করেন। কালে কালে উনার
এই ক্বাসিদা শরীফের এক একটি ভবিষ্যৎবাণী ফলে গেছে আশ্চর্যজনকভাবে। ইংরেজ শাসনের ক্রান্তিকালে
এ ক্বাসিদা শরীফ মুসলমানদের মধ্যে মহাআলোড়ন সৃষ্টি করে। এর অসাধারণ প্রভাব লক্ষ্য করে
ব্রিটিশ বড় লাট লর্ড কার্জনের শাসনামলে (১৮৯৯-১৯০৫) এ ক্বাসিদা শরীফ নিষিদ্ধ ঘোষণা
করা হয়।
এই ক্বাছীদা শরীফের ৪২ থেকে ৪৮ তম প্যারা
পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে ফিকির করলে বুঝতে পারবেন গাজওয়াতুল হিন্দ কতো নিকটেঃ
প্যারাঃ ৪২:- মহরম মাসে হাতিয়ার হাতে পাইবেন
মুমিনগণ
ঝঞ্জারবেগে করিবেন তাহারা পাল্টা আক্রমণ।
প্যারাঃ ৪৩:- সৃষ্টি হইবে ভারত ব্যাপিয়া
প্রচণ্ড আলোড়ন
‘উসমান’
এসে হাতে নিবেন জিহাদের বজ্র কঠিন পণ।
প্যারাঃ ৪৪: ‘সাহেবে
কিরান’‘হাবীবুল্লাহ’ হাতে
নিয়ে শমসের
খোদায়ী মদদে ঝাপিয়ে পড়িবেন ময়দানে যুদ্ধের।
-- টীকাঃ এখানে মুসলমানদের সেনাপতির কথা
বলা হয়েছে। সেই মহান সেনাপতির উপাধি/লক্বব হবে ‘হাবীবুল্লাহ’। (আমাদের দেখতে হবে কারা কারা এই লক্ববের দাবি করছেন এই মুহূর্তে, উনাদের সকলের মধ্যে যার তক্বওয়া ও পরহেজগারিতা সর্বাধিক উনাকে সেনাপতি মনে করা যেতে পারে)
প্যারাঃ ৪৫:- কাপিবে মেদিনী সীমান্ত বীর
গাজীদের পদভারে
ভারতের পানে আগাইবেন তারা মহারণ হুঙ্কারে।
প্যারাঃ ৪৬:- পঙ্গপালের মত ধেয়ে আসবেন এসব
‘গাজীয়ে
দ্বীন’
যুদ্ধে জিতিয়া বিজয় ঝাণ্ডা করিবেন উড্ডীন।
প্যারাঃ ৪৭:- মিলে এক সাথে দক্ষিণী ফৌজ ইরানী
ও আফগান
বিজয় করিয়া কবজায় পুরা আনিবেন হিন্দুস্তান।
প্যারাঃ ৪৮: বরবাদ করে দেয়া হবে দ্বীন ঈমানের
দুশমন
অঝোর ধারায় বর্ষিত হবে মহান আল্লাহ তা'য়ালা-এর রহমত বর্ষণ।
সম্পূর্ণ কাসিদা শরীফ পাবেন এইখানে বাংলার
সাথে উর্দু পিডিএফ সহকারে।
খবর বিভাগঃ
ইসলাম
ধর্ম ও জীবন
ভারত
0 facebook: