13 August 2019

আতংকের ঈদ গেলো অবরুদ্ধ কাশ্মীরে, অধিকাংশ মসজিদ-ঈদগাহ-ই ছিল বন্ধ

কাশ্মীরের একটি মসজিদ অবরুদ্ধ করে রেখেছে ভারতীয় বাহিনী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হলেও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অবস্থা এদিন ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।

ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যটিতে সোমবার ঈদ শুধু নামে মাত্র উদযাপিত হয়েছে। কাশ্মীর ও শ্রীনগরের বেশিরভাগ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ের অনুমতি দেয়নি নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার।

কাশ্মীরি মিডিয়াগুলোর বরাতে বিবিসি ও জিয়ো নিউজ জানায়, মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ উৎসব ঈদুল আজহায় রাজধানী শ্রীনগরের সবচেয়ে বড় জামা মসজিদসহ উপত্যকাটির অধিকাংশ মসজিদ বন্ধ রেখেছে ভারতীয় বাহিনী। শ্রীনগরের বড় কোন মসজিদে বা প্রধান শহরে ঈদের জামাতের অনুমতি দেয়া হয়নি।

বিবিসির স্থানীয় সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, কাশ্মীরের জামে মসজিদ বা হজরতবালের মতো প্রধান মসজিদগুলোতে কোন বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।

মানুষকে বলা হয়েছে, নিজেদের মহল্লাতে স্থানীয় ছোট মসজিদেই যেন তারা ঈদের নামাজ আদায় করেন।

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা গেছে, শ্রীনগরের ছোট একটি মসজিদের ভেতর ঈদের নামাজ পড়ছেন, তবে সেখানেও বড়জোর ৭০ বা ৮০ জনের মতো ছিলেন।

মোস্তফা নামের শ্রীনগরের এক ব্যবসায়ী বলেন, কাশ্মীরের মানুষ এমন বিভীষিকাময় ঈদ আর কখনও কাটিয়েছেন বলে মনে হয় না। গত ৫০ বছর যাবত আমরা বড় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করছি। কিন্তু আজ আমাদের মসজিদের কাছে আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এটাই কি ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের গণতান্ত্রিক আচরণ?
কাশ্মীরে মুসলমানদের ঈদের জামাতে অংশ নিতে ভারতীয় বাহিনীর বাধা।  ছবি: বিবিসি
গত শুক্রবার কাশ্মীরে চলমান ১৪৪ ধারা উঠিয়ে সাময়িকভাবে নিয়েছিল ভারত সরকার। এতেটানা ৫ দিনের অচলাবস্থার কিছুটা হলেও অবসান হয়। চালু করা হয়েছিল ইন্টারনেট ও টেলিফোন পরিসেবা।

জুমার নামাজ আদায় করতে দিতে কারফিউ শিথিল করা হয়েছিল। যদিও রাজধানী শ্রীনগরের সবচেয়ে বড় মসজিদ (জামা মসজিদ) বন্ধ রাখা হয়েছিল।

কিন্তু রোববার কাশ্মীরে ফের কারফিউ জারি করে ভারত প্রশাসন। যে কারণে সোমবার ঈদের দিনে পুরো কাশ্মীরের পথঘাট থমথমে বিরাজ করছে। ঈদের দিনেও মানুষ টেলিফোনে প্রিয়জনদের সঙ্গে একটু কথা বলতে পারবেন তাদের সেই আশাও পূর্ণ হয়নি।

এদিকে ঈদের দিনেও পুলিশের পেলেট গান বা ছররা বন্দুকের গুলিতে আহত হয়ে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে সরকার সে কথা অস্বীকার করছে।

গুলিতে জখম হয়ে হাসপাতালে কেউ ভর্তি আছেন কি না, বিবিসির এ প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের এক মুখপাত্র দাবি করেন পুলিশ এখনও পর্যন্ত একটা বুলেটও চালায়নি।

সবমিলিয়ে এবারের কোরবানির ঈদে কাশ্মীর উপত্যকা জুড়ে শুধুই দমবন্ধ আতংক, উত্তেজনা আর হতাশারই ছবি। এমন পরিস্থিতি কতদিন চলে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।


শেয়ার করুন

0 facebook: