আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ স্থানীয় স্বাধীনতাকামী
মুক্তিযুদ্ধাদের সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) সদস্যরা মিয়ানমারের
উত্তরাঞ্চলের কাচিন প্রদেশে সেনাবাহিনীর সাথে প্রচণ্ড সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে। সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করায় কাচিন জনগোষ্ঠীর
হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। জাস্টিস অ্যান্ড পিস কমিশন নামের একটি সংগঠনের কর্মকর্তা ফাদার ভিনসেন্ট
শ্যানলং বলেছেন, ১৭ জানুয়ারি থেকে সেনাবাহিনী ও কেআইএ’র মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। প্রায় প্রত্যেক দিন সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ও
আশ্রয়শিবির মালিখা নদী দ্বারা বিভক্ত এবং তারা একে অপরকে দেখতে পায়। সেনাবাহিনী যখন ভারী গোলাবারুদ নিপে করে তখন তা
গিয়ে পড়ছে এনদুত ইয়াং শিবিরের কাছে। গ্রামবাসী জঙ্গলের দিকে ছুটছেন এবং আমি জানি না তারা এখন কোথায় আছেন?’ ভিনসেন্ট বলেন, সোমবার এনদুত ইয়াং শিবিরের
একটি নার্সারি স্কুলে ভারী গোলা আঘাত হেনেছে। মাইতকিনাভিত্তিক সংগঠন পিস টকস ক্রিয়েশন গ্রুপের কর্মকর্তা ইউ লামাই জাম লা
বলেন, মঙ্গলবার সেখানে কোনো সংঘর্ষ দেখা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি, গ্রামবাসীরা যখন তাদের
বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন; তখন শরীরের কাপড় ছাড়া তারা কিছুই সাথে নেয়নি। জঙ্গলে আশ্রয় নেয়ায় সেখানে তারা কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে। তাদের সম্পর্কে কেউ আমাদের জানাচ্ছে না।’ এনদুত ইয়াং শিবিরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিভারেন্ড ব্যাং সেং বলেন, তিনি শুনেছেন যে পালিয়ে
যাওয়ার সময় গর্ভবতী এক কাচিন নারী সন্তান প্রসব করেছেন। কাচিন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া দো ন্যাং পুর সাথে যোগাযোগ করেছে ব্যাং সেং। দো ন্যাং তাকে জানিয়েছেন, তারা জানেন না তারা এখন
কোথায় আছেন; কিন্তু তাদের আশ্রয়, পোশাক, ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী প্রয়োজন। দো ন্যাং বলেছেন, ‘আমরা বনে-জঙ্গলে দৌড়ে বেড়াচ্ছি। গ্রাম ছেড়ে পালানোর সময় কেউ কেউ খাবার সাথে নিয়েছেন। আমি শুনেছি, অনেকেই সেগুলো ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন। তাদের অবস্থান কোথায় তা জানা যায়নি।’
এর আগে ২০১৬ সালে সেনাবাহিনী
ও কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ গ্রাম ছেড়ে
পালিয়ে যান। পরে আবারো তাদের আশ্রয় হয়
কাচিনের শরণার্থীশিবিরে। ভিনসেন্ট শ্যানলং বলেন, ‘ওই এলাকায় পৌঁছানোর জন্য একমাত্র উপায় নৌপথ। ২০১২ সাল থেকে জেটি চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছে। এ জন্য সেখানে মানবিক ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।’
সু চির প্যানেল থেকে
মার্কিন কূটনীতিকের পদত্যাগ
রয়টার্স
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে
মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির গঠিত আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্যানেল থেকে পদত্যাগ
করেছেন মার্কিন কূটনীতিক বিল রিচার্ডসন। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক ওই পরামর্শক প্যানেল কেবলই লোক দেখানো। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে সু চির নৈতিক অবস্থান নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মুখে
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে গত পাঁচ মাসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে
আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসঙ্ঘ সেনাবাহিনীর ওই
অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে বর্ণনা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কিনটন সরকারের কেবিনেট সদস্য রিচার্ডসন এক সাাৎকারে
বলেন, ‘আমার পদত্যাগের প্রধান কারণ হলো, ওই পরামর্শক প্যানেল আসলে হোয়াইটওয়াশ। সরকারের চিয়ারলিডিং স্কোয়াডের সদস্য হয়ে থাকার
কোনো ইচ্ছা আমার নেই।’
গত সোমবার ওই প্যানেলের
সদস্যদের সাথে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চির বৈঠক ছিল। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে খবর সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে
গ্রেফতার করে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি
রিচার্ডসন সেখানে তুললে সু চির সাথে তার বাদানুবাদ হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের সাবেক গভর্নর রিচার্ডসন বলেন, ওই প্রসঙ্গ তোলায় সু চি েেপ
ওঠেন এবং সাফ জানিয়ে দেন, সাংবাদিকদের নিয়ে ওই ঘটনা পরামর্শক প্যানেলের দেখার বিষয় নয়। রিচার্ডসনের এই বক্তব্যের বিষয়ে সু চি বা তার
মুখপাত্র জ তাইয়ের বক্তব্য জানা যায়নি।
খবর বিভাগঃ
আন্তর্জাতিক
0 facebook: