26 January 2018

হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারের আরেক রাজ্যে শুরু হওয়া ভয়াবহ সংঘর্ষে


আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ স্থানীয় স্বাধীনতাকামী মুক্তিযুদ্ধাদের সংগঠন কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির (কেআইএ) সদস্যরা মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের কাচিন প্রদেশে সেনাবাহিনীর সাথে প্রচণ্ড সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছেসংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করায় কাচিন জনগোষ্ঠীর হাজার হাজার পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছেস্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছেজাস্টিস অ্যান্ড পিস কমিশন নামের একটি সংগঠনের কর্মকর্তা ফাদার ভিনসেন্ট শ্যানলং বলেছেন, ১৭ জানুয়ারি থেকে সেনাবাহিনী ও কেআইএর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছেপ্রায় প্রত্যেক দিন সেখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ও আশ্রয়শিবির মালিখা নদী দ্বারা বিভক্ত এবং তারা একে অপরকে দেখতে পায়সেনাবাহিনী যখন ভারী গোলাবারুদ নিপে করে তখন তা গিয়ে পড়ছে এনদুত ইয়াং শিবিরের কাছেগ্রামবাসী জঙ্গলের দিকে ছুটছেন এবং আমি জানি না তারা এখন কোথায় আছেন?’ ভিনসেন্ট বলেন, সোমবার এনদুত ইয়াং শিবিরের একটি নার্সারি স্কুলে ভারী গোলা আঘাত হেনেছেমাইতকিনাভিত্তিক সংগঠন পিস টকস ক্রিয়েশন গ্রুপের কর্মকর্তা ইউ লামাই জাম লা বলেন, মঙ্গলবার সেখানে কোনো সংঘর্ষ দেখা যায়নি

তিনি আরও  বলেন, ‘আমি দেখেছি, গ্রামবাসীরা যখন তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন; তখন শরীরের কাপড় ছাড়া তারা কিছুই সাথে নেয়নিজঙ্গলে আশ্রয় নেয়ায় সেখানে তারা কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারেতাদের সম্পর্কে কেউ আমাদের জানাচ্ছে নাএনদুত ইয়াং শিবিরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিভারেন্ড ব্যাং সেং বলেন, তিনি শুনেছেন যে পালিয়ে যাওয়ার সময় গর্ভবতী এক কাচিন নারী সন্তান প্রসব করেছেনকাচিন ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া দো ন্যাং পুর সাথে যোগাযোগ করেছে ব্যাং সেংদো ন্যাং তাকে জানিয়েছেন, তারা জানেন না তারা এখন কোথায় আছেন; কিন্তু তাদের আশ্রয়, পোশাক, ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী প্রয়োজনদো ন্যাং বলেছেন, ‘আমরা বনে-জঙ্গলে দৌড়ে বেড়াচ্ছিগ্রাম ছেড়ে পালানোর সময় কেউ কেউ খাবার সাথে নিয়েছেনআমি শুনেছি, অনেকেই সেগুলো ভাগাভাগি করে খাচ্ছেনতাদের অবস্থান কোথায় তা জানা যায়নি

এর আগে ২০১৬ সালে সেনাবাহিনী ও কাচিন ইন্ডিপেনডেন্স আর্মির সদস্যদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েওই সময় স্থানীয় হাজার হাজার মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যানপরে আবারো তাদের আশ্রয় হয় কাচিনের শরণার্থীশিবিরেভিনসেন্ট শ্যানলং বলেন, ‘ওই এলাকায় পৌঁছানোর জন্য একমাত্র উপায় নৌপথ২০১২ সাল থেকে জেটি চলাচল নিষিদ্ধ রয়েছেএ জন্য সেখানে মানবিক ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে

সু চির প্যানেল থেকে মার্কিন কূটনীতিকের পদত্যাগ
রয়টার্স
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চির গঠিত আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্যানেল থেকে পদত্যাগ করেছেন মার্কিন কূটনীতিক বিল রিচার্ডসনতিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক ওই পরামর্শক প্যানেল কেবলই লোক দেখানোরোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে সু চির নৈতিক অবস্থান নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন
সেনাবাহিনীর দমনপীড়নের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে গত পাঁচ মাসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেজাতিসঙ্ঘ সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে জাতিগত নির্মূল অভিযানহিসেবে বর্ণনা করে আসছেযুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কিনটন সরকারের কেবিনেট সদস্য রিচার্ডসন এক সাাৎকারে বলেন, ‘আমার পদত্যাগের প্রধান কারণ হলো, ওই পরামর্শক প্যানেল আসলে হোয়াইটওয়াশসরকারের চিয়ারলিডিং স্কোয়াডের সদস্য হয়ে থাকার কোনো ইচ্ছা আমার নেই

গত সোমবার ওই প্যানেলের সদস্যদের সাথে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর সু চির বৈঠক ছিলরোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে খবর সংগ্রহের দায়িত্বে থাকা রয়টার্সের দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইনে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি রিচার্ডসন সেখানে তুললে সু চির সাথে তার বাদানুবাদ হয়যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকো রাজ্যের সাবেক গভর্নর রিচার্ডসন বলেন, ওই প্রসঙ্গ তোলায় সু চি েেপ ওঠেন এবং সাফ জানিয়ে দেন, সাংবাদিকদের নিয়ে ওই ঘটনা পরামর্শক প্যানেলের দেখার বিষয় নয়রিচার্ডসনের এই বক্তব্যের বিষয়ে সু চি বা তার মুখপাত্র জ তাইয়ের বক্তব্য জানা যায়নি


শেয়ার করুন

0 facebook: