10 February 2018

ভারতকে পাত্তা দিচ্ছেন না মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন একেবারেই পাত্তা দিচ্ছেন না প্রতিবেশী ক্ষমতাধর দেশ ভারতকে। জরুরি অবস্থার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থনে ভারতকে ডিঙিয়ে পাশের রাষ্ট্রগুলোতে দূত পাঠিয়েছে মালদ্বীপ।

শুক্রবার বর্তমান বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি চীনসহ পাকিস্তান ও সৌদি আরবে দূত পাঠিয়েছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। প্রথমদিকে ভারতে দূত পাঠানোর কথা বললেও পরে অজ্ঞাত কারণেসে অবস্থান থেকে সরে আসেন তিনি।

এমনকি যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদেরও গুনায় ধরছেন না মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। ওইসব দেশের দূতরা মালদ্বীপে গেলেও তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকার করেন তিনি। এতে বেশ হতাশ হয়েছেন ইউরোপীয়ান দূতেরা। খবর মালদ্বীপ টাইমস ও রয়টার্সের।

গত সপ্তাহে রাজবন্দি ১২ জন বিরোধী নেতার মুক্তির বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের রায়ের পর সরকার ও আদালতের দ্বন্দ্ব চরম ওঠে। সুপ্রিমকোর্টের রায় প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দেন ইয়ামিন। পরে গত সোমবার থেকে ১৫ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেন তিনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের সঙ্গে ভারতও জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের জন্য মালদ্বীপ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ আহ্বানে সাড়া না দিয়ে আঞ্চলিক পরাশক্তি চীনের পক্ষ টানতে তোড়জোড় শুরু করেন বেইজিংপন্থী ইয়ামিন।

বুধবার রাতে প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের ওয়েবসাইটে বলা হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নমন্ত্রী মোহাম্মদ সাইদকে চীনে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আসিমকে পাকিস্তানে এবং মৎস্যমন্ত্রী মোহাম্মদ শাইনিকে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন ইয়ামিন। এতে আরও বলা হয়, প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনের নির্দেশনায় মন্ত্রিসভার সদস্যরা বন্ধু দেশগুলোতে সফর করবেন এবং বর্তমান পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য তাদেরকে জানাবেন।

সম্প্রতি চীনের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিনির্মাণে চুক্তি করেছে ইয়ামিন সরকার। এ চুক্তির কারণে স্বভাবতই তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে ভারত। ইয়ামিনের প্রতি ভারতের এই বিরূপ মনোভাবের কারণে মালদ্বীপের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লিকে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। মালদ্বীপ দখলে চীন পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন ভারতপন্থী নির্বাসিত এ সাবেক প্রেসিডেন্ট।

এর আগে ১৯৮৮ সালে মালদ্বীপে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ও অভ্যুত্থান রুখে দিয়েছিল ভারত। তামিলরা মালদ্বীপ দখলে নিতে চাইলে তাদের হঠিয়ে দেয় ভারতের সেনাবাহিনী। অপারেশন ক্যাকটাস নামের এ অভিযানে কোনো রকমে রক্ষা পান তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গাইয়ুম।

এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ হুশিয়ারি দিয়ে বলেছে, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা না হলে মালদ্বীপের পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকা সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, ‘মালদ্বীপের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক এবং ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে মোড় নিতে পারে।
এদিকে মালদ্বীপের রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মালদ্বীপ ছাড়াও আফগানিস্তানের অবস্থা নিয়েও আলোচনা করেছেন দুই নেতা।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মালদ্বীপের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে ট্রাম্প ও মোদি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও আইনের শাসনের মর্যাদা সমুন্নত রাখার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন।


শেয়ার করুন

0 facebook: