10 February 2018

সেসব সেনাদের গুলি করে মেরে ফেলো যারা রোহিঙ্গাদের গুলি করবে না


স্বদেশবার্তা ডেস্কঃ মিয়ানমারের সাবেক সেনা সদস্য মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরতার চিত্র নিজ চোখে দেখেছেনরোহিঙ্গা নিধনে সেনা কর্মকর্তাদের ভয়াবহ নির্দেশ নিজ কানে শুনেছেননিজের গ্রামও জ্বলতে দেখেছেনকিন্তু কিছুই করার ছিল নাএভাবেই রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা দেন তিনি

গার্ডিয়ানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে রাখাইন রাজ্যের তুলাতলি গ্রামে সেনাবাহিনীর হামলার নৃশংসতা তুলে ধরেন নাজমুল ইসলামএক রোহিঙ্গা নারীকে ভালোবেসে বিয়ে করেনধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হনগ্রামের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা ৬০ বছরের নাজমুলকে হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে আটক করা হয়

প্রায় একদশক ধরে রাখাইনে দায়িত্ব পালন করা এ সেনা সদস্যের দাবি, হামলার দিন তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলনিজের গ্রাম জ্বালিয়ে দিতে দেখেছেন নাজমুলতিনি বলেন, বিমান থেকে নেমে সেনাবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা নির্দেশ দেন, রোহিঙ্গাদের সবাইকে মেরে ফেলযারা রোহিঙ্গাদের গুলি করবে না তাদেরকেও হত্যা কর তারা আরও নির্দেশ দেন, রোহিঙ্গাদের লাশ নদীতে ফেলে দিও না, আগুনে পুড়িয়ে দাওসাক্ষাৎকারে নাজমুল বলেন, শেষ বিকালে তুলাতলি থেকে যখন মানুষ পোড়া গন্ধ ভেসে আসছে তখন এক সেনা কর্মকর্তা গ্রামবাসীদের উদ্দেশে চিৎকার করে ওঠেন, ‘আমাদের একশপ্লেট ভাত আর মুরগির মাংস দরকারতাড়াতাড়ি নিয়ে আসোমানুষ পোড়ানোর গন্ধে ভিটে-মাটি ছেড়ে পালাচ্ছিল গ্রামবাসী

গত আগস্টে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রাখাইনে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীজাতিসংঘ ওই সহিংসতাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের উৎকৃষ্ট উদাহরণ বলে মন্তব্য করে সহিংসতার মুখে এ পর্যন্ত প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেগ্রামে নৃশংসতার পর নাজমুলের স্ত্রী তাদের পাঁচ সন্তানকে নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেননাজমুলের দাবি, কয়েক সপ্তাহ আটক রেখে কর্মকর্তারা তার ওপর আবারও বৌদ্ধধর্মে ফিরে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন


শেয়ার করুন

0 facebook: