নিজস্ব
প্রতিনিধিঃ দেশের
ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন আগামী ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত হবে।
এই সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগে আসবে নতুন নেতৃত্ব। বিভিন্ন কারণে সমালোচিত থাকার কারণে
আসন্ন সম্মেলনে ছাত্রলীগকে ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
ওবায়দুল কাদের। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের সিন্ডিকেট, সম্মেলনে
বিতর্কিতদেরকে নেতা বানানোর চেষ্টা রয়েছে।
বিএনপি-জামায়াতের
সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্কযুক্ত,
চাঁদা ও ছিনতাইয়ে অভিযুক্তসহ শিবিরের রাজনীতি করে আসা অনেক নেতা-কর্মীই
ছাত্রলীগের শীর্ষপদের দৌঁড়ে এগিয়ে আছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংগঠনটিকে আদর্শে দিয়ে
ধরে রাখা নেতাকর্মীরা এবং আওয়ামী লীগের নেতারাও।
তারা বলছেন, ব্যক্তিস্বার্থ
চরিতার্থ করার জন্য কতিপয় লোক এসব দুষ্কৃতিকারীদের নেতৃত্বে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
কিন্তু তাদের সে চেষ্টা সফল হবেনা বলেও তারা জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয়
এক নেতা নাম গোপন রাখার স্বার্থে বলেন, ন্যূনতম বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে
সম্পৃক্ততা আছে এমন কোনো পরিবারের কেউ নেতা হবে না। তবে সিন্ডিকেট আবার বিতর্কিতদের
নেতা বানাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিএনপি-জামায়াতের
সঙ্গে যারা ঘনিষ্ঠ: বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্টসম্পর্কযুক্ত একাধিক
নেতা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদের জন্য এগিয়ে আছে। তারা হলেন সহ-সভাপতি আরেফিন সিদ্দিক সুজন, যুগ্ম-সম্পাদক
দিদার মো. নিজামুল ইসলাম,
ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, আইন সম্পাাদক
আল নাহিয়ান খান জয়, প্রশিক্ষণ
সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম,
শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, উপ-আইন
সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন,
ঢাবি ছাত্রলীগের সদ্য সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, এফ রহমান
হল ছাত্রলীগের সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ সভাপতি শাহরিয়ার কবির
বিদ্যুৎ।
আরেফিন
সিদ্দিক সুজনের বাড়ি মাদারীপুর শহরের পাশে পাঁচখোলা ইউনিয়নের মইষের চর গ্রাম। তার পিতা
আলহাজ¦ আমিন
উদ্দিন হাইস্কুলের সাবেক শিক্ষক। সুজনের পিতা পাকিস্তান আমলে জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয়
কর্মী ছিলেন। সুজন তার সূর্যসেন হলের কক্ষে অস্ত্র ও মাদক রাখতেন। তিনি ইয়াবা ব্যবসার
সঙ্গেও জড়িত।
দিদার
মো. নিজামুল ইসলামের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম শিমুল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সদস্যপার্থী
ছিলেন। বিবাহিত দিদারের শশুর উকিল রেজাউল ইসলাম
রফিক জামায়াতের রোকন এবং কুমিল্লা মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি।
ইয়াজ
আল রিয়াদ। তার চাচাতো ভাই আলমগীর বিএনপির রাজনীতি করে। তার আরেক চাচাতো ভাই ফারুক জামায়াতের
আহমদপুর ইউনিয়নের সেক্রেটারি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আপন ভাই মুরাদ মেম্বার। তার নামে
চারিত্রিক, চাঁদাবাজি, জুলুমসহ
বিভিন্ন অপরাধের প্রায় ১০-১২টি মামলা রয়েছে।
আল নাহিয়ান
খান জয়। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার আগুরপুর গ্রামে। পিতা আবদুল
আলিম খান প্রগতি ইন্সুরেন্সে চাকরি করেন। তার চাচাতো ভাই কামরুল ইসলাম হিমু খান উপজেলা
বিএনপির সহ সভাপতি।
মাজহারুল
ইসলাম শামীম। বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া। তার পরিবারের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের যোগাযোগ রয়েছে।
তার বাবা চাঁদপুর কচুয়া থানার জগতপুর ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। বিএনপির
পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। তার আপন চাচাত ভাই হাফেজ হুমায়ুন
কবির কুমিল্লা শহর ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি।
গোলাম
রাব্বানী আত্মপ্রচারে সব সময় নিয়োজিত থাকেন। ভুয়া নিউজ পোর্টালে সবসময় নিজের প্রচারণা
পক্ষে কাজ চালান। মাঝে মাঝে নেশা করেন বলে অভিযোগ আছে।
উপ-আইন
সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের পরিবারের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সম্পর্ক রয়েছে।
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদ্য সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স। তার দাদা মুসলিম
লীগ করতে এবং রাজাকার ছিল। তার পরিবারের অধিকাংশই জামায়াত-বিএনপির রাজনীতি করে। প্রিন্স
এক সময় শিবিরের সমর্থক ছিল। প্রিন্সের বন্ধু জিলানী রামপাল কলেজে ছাত্রদল করত।
স্যার
এ এফ রহমান হলের সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান নীলক্ষেত এলাকায় জারের পানির ব্যবসায়ী
হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। নীলক্ষেত এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
শাহরিয়ার
কবির বিদ্যুৎ ছাত্রদল করত। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের সময় তার কোনো খোঁজ ছিল
না। সুযোগসন্ধানী এই নেতা আওয়ামী লীগের এক সাংসদের ঘনিষ্ট।
0 facebook: