07 April 2019

ইরাকের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে সৌদি

ছবিঃ সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইরানকে আটকাতে ইরাকের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে সৌদি আরব। এর অংশ হিসেবে সৌদি আরবের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়ক একটি উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধি দল ইরাক সফরে গেছে এবং সৌদি রাজাও ইরাকের জন্য অতি মূল্যবান ও লোভনীয় প্রস্তাব দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন।

ইরাক ও সৌদি আরবের মধ্যে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে এবং নানা ঘাতপ্রতিঘাত অতিক্রম করে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ দুই দেশের সম্পর্কে বরফ গলা শুরু হয়েছে। সৌদি আরব ২৫ বছর পর ২০১৫ সালে বাগদাদে দূতাবাস উদ্বোধন করে এবং তখন থেকে রিয়াদ ও বাগদাদের মধ্যে কূটনৈতিক সফর বিনিময় অব্যাহত থাকে।

গত বুধবার সৌদি আরবের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়ক ১০০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইরাক সফরে যায়। এদের মধ্যে সাতজন মন্ত্রীও ছিলেন। ১৯৯০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ২৫ বছর এ দু`দেশের মধ্যে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিল না।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরাকের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার পেছনে সৌদি আরবের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরাকে ইরানের প্রভাব ঠেকানো এবং তেহরানের সঙ্গে বাগদাদের দূরত্ব সৃষ্টি করা।

সৌদি প্রতিনিধি দল এমন সময় ইরাক সফরে গেলেন যখন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি মাত্র কিছুদিন আগেই বাগদাদ সফর করেন এবং দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। এ সফরকালে ইরাক ও ইরানের মধ্যে কোটি কাটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে।

বর্তমানে সৌদি সরকার তাদের শক্তিশালী অর্থনীতিকে কাজে লাগিয়ে ইরাক ও ইরানের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি বাগদাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এ লক্ষ্যে গত বছর ইরাক ও সৌদি আরবের সমন্বয় পরিষদের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বাগদাদে এ সফরের মধ্য দিয়ে।

সৌদি বাণিজ্য বিভাগের প্রধান বলেছেন, গত বছর ইরাকে তারা দুই কোটি ৬০০ ডলার মূল্যের পণ্য বিক্রি করেছে। সৌদি প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক বাগদাদ সফরের পর সৌদি কর্মকর্তারা বলেছেন, কথা ছিল ইরাকের জনগণের জন্য আমরা বিশাল ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরি করে দেব।

কিন্তু দেশটির রাজা সালমান বিন আব্দুল আজিজ ইরাকিদের জন্য ক্রীড়া উপশহর নির্মাণ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন যার জন্য ব্যয় হবে ১০০ কোটি ডলার। এটা সৌদি রাজার পক্ষ  থেকে ইরাকিদের জন্য উপহার।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি আরব ইরাকের বর্তমান অর্থনৈতিক দুরবস্থার সুযোগ নিচ্ছে। অর্থনৈতিক সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে একদিকে তারা ইরাকে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে অন্যদিকে তেহরান-বাগদাদ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, সৌদি আরব ইরাকের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি ধর্মীয় ক্ষেত্রেও সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। ইরাকের মোট জনগোষ্ঠীর ৯৭ শতাংশই মুসলমান এবং ইরাক ও সৌদি জনগণের মধ্যে জিয়ারত বা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে আসা যাওয়ার রয়েছে।

যাইহোক, ইরাকে সাম্প্রতিক বছরে সৌদি সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের পর আগামীতে সৌদি আরবের ভূমিকা কেমন হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্যসূত্রঃ পার্সটুডে


শেয়ার করুন

0 facebook: