09 July 2019

পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে গির্জাকে পবিত্র মসজিদ বানালেন খ্রিস্টান পাদ্রি

ছবিঃ সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে গির্জাকে মসজিদ বানালেন পাদ্রি। সাম্প্রতি আফ্রিকার একটি প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য কেনিয়া।

কেনিয়ার পশ্চিম প্রদেশের খ্রিস্টান পাদ্রি চার্লস ওকাওয়ানি দুই বছর আগে পবিত্র ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে কর্মস্থান ‘ওহিয়ে এলাহি’ গির্জার স্থানে মসজিদ নির্মাণ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। সম্প্রতি গির্জার স্থানে নির্মিত মসজিদটির উদ্বোধনের সময় তিনি ইসলামধর্ম গ্রহণের বিস্তারিত কারণ উল্লেখ করেছেন।

খবর ইন্টারন্যাশনাল কোরআন নিউজ এজেন্সির।

এদিকে জানা গেছে, ‘গড’স কল’ নামক চার্চের সাবেক পাদ্রি চার্লস ওকাওয়ানি নিজের নাম পরিবর্তন করে ইসমাইল ওকাওয়ানি রেখেছেন। তিনি কেনিয়ার কিসি শহরের মুসলিম আলেম ও পণ্ডিত মুস্তাফা সাউকেইকের কাছে পবিত্র কালেমায়ে শাহাদাত তেলাওয়াত করে পবিত্র ইসলামধর্ম গ্রহণ করেন।

এদিকে কেনিয়ায় অবস্থিত ইরানি কালচারাল সেন্টারের বরাতে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ‘ওহিয়ে এলাহি’ নামক গির্জায় খ্রিস্টানরা তাদের ইবাদত করতেন। কিন্তু বর্তমানে সব খ্রিস্টান পুণ্যার্থী (৬৩ জন) ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করায় গির্জাটি মসজিদে পরিবর্তন করা হয়েছে।

এদিকে কেনিয়ার মুসলিম উম্মাহ কমিটির চেয়ারম্যান, কেইসুমু শহরের ‘কল ডেভেলপমেন্ট’ গ্রুপের প্রতিনিধি এবং তুরস্কের খাইরাত আল-বারাকার ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি শায়খ খালফান খামিসের উপস্থিতে গির্জার স্থানে নবনির্মিত মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।

এ সময় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ইসমাইল ওকাওয়ানি বলেন, ‘বিশপ হিসাবে আমার মেয়াদকালে খ্রিস্টধর্মের বাণী প্রচারের জন্য কেনিয়ার মালিন্ডি, মুম্বাসা ও নাইরোবি এবং পার্শ্ববর্তী দেশ তানজানিয়ায় ভ্রমণ করেছি। তাই এসব এলাকায় বসবাসরত খ্রিস্টান ও মুসলমানদের সম্পর্কে অধ্যয়নের দারুণ সুযোগ পেয়েছিলাম।

এটি আমাকে এ সিদ্ধান্তে উপনীত করেছিল যে, ইসলামই সর্বোৎকৃষ্ট ধর্ম। আর এ কারণে আমি ইসলামধর্মের ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছি।’ এ সময় ইসমাইল ওকাওয়ানি আরও বলেন, ‘আমার আগের চার্চটি আগে নায়ালগোসি গড’স কল চার্চ নামে পরিচিত ছিল। কিন্তু এখন থেকে সেটি নায়ালগোসি পবিত্র জামে মসজিদ।

এছাড়াও আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পবিত্র ইসলামধর্ম সম্পর্কে অধিক তথ্য জানতে এবং গবেষণা করতে পৃথিবীর যেকোনো স্থানে যেতে আমি রাজি। প্রয়োজনে দীর্ঘ সফর করে আমি ইসলামধর্মের জ্ঞান অর্জন করবো।’ এদিকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, সাবেক পাদ্রি চার্লস ওকাওয়ানি ২০১৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ইসলাম গ্রহণ করেন।

তখন তার সঙ্গে গির্জার ২৩ সদস্যও পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেন। সেন্ট্রাল ইন্টিলিজেন্স এজেন্সির সূত্র মতে, খ্রিস্টান প্রধান দেশ কেনিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম ইসলাম। এ দেশের মোট জনগণের ১১.২% শতাংশ মুসলিম।

শ্রীলংকায় পদত্যাগে বাধ্য করা হল মুসলিম মন্ত্রীদের

শেষ পর্যন্ত ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেন শ্রীলংকার সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের ৯ মন্ত্রী। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন দুই মুসলিম রাজ্যপালও। মুসলিম মন্ত্রীদের পদত্যাগের দাবিতে দেশটির প্রভাবশালী বৌদ্ধ সন্ন্যাসী আথুরালিয়ে রাথানার আমরণ অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার পদত্যাগ করেন মন্ত্রীরা।

মুসলিম মন্ত্রীদের গণপদত্যাগে বাধ্য করার ঘটনায় বেশ কয়েকজন সিনিয়র রাজনীতিকসহ উদারমনা অনেকেই নিন্দা জানিয়েছেন। বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর সাম্প্রদায়িক দাবি নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের। শ্রীলঙ্কায় মোট জনসংখ্যা দুই কোটি ১০ লাখ। এর মাত্র ৯ শতাংশ মুসলিম।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারত মহাসাগরীয় দেশটির তিনটি চার্চ ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ২৫৩ জন নিহত ও কয়েকশ’ আহত হন। এ ঘটনায় দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। স্থানীয় মুসলিমদের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার পারদ বাড়তে থাকে।

মুসলিমদের ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ- মাদ্রাসা ও ইসলামী প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে থাকে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা। এরই মধ্যে দুই প্রাদেশিক গভর্নর ও এক মন্ত্রী- সিনিয়র তিন মুসলিম কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে ভক্তদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন একাধারে প্রভাবশালী সন্ন্যাসী, পার্লামেন্টের এমপি ও প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার উপদেষ্টা আথুরালিয়ে রাথানা।

ঘোষণা দেন, প্রেসিডেন্ট ওই তিন কর্মকর্তাকে না সরানো পর্যন্ত আমরণ অনশন করবেন তিনি। সন্ন্যাসী ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলাকারীদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেন। তার সমর্থনে রাজধানী কলম্বো ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভও হয়।

দিনচারেক আগে মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু সদস্যদের সরানোর দাবিতে প্রবল বিক্ষোভও হয়। অভিযোগ ওঠে, শ্রীলংকার আঞ্চলিক ইসলামিক সংগঠন ন্যাশনাল তৈহিদ জামাতের সঙ্গে তিন মন্ত্রীর যোগাযোগ রয়েছে। সন্ন্যাসীর চার দিনের অনশনের মাথায় মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট।

এরপরই অনশন ভঙ্গ করেন ওই সন্ন্যাসী। মন্ত্রিসভার অন্য ৮ জন মুসলিম মন্ত্রীকে টার্গেট না করলেও অন্য তিন কর্মকর্তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে সোমবার একযোগে ইস্তফা দেন মন্ত্রীরা। সংখ্যালঘু মন্ত্রীরা জানিয়েছেন, সিআইডি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা মন্ত্রিসভায় ফিরবেন না।

নভেম্বরে শুরু হতে পারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। ১৫ নভেম্বর থেকে ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে এই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান মাহিন্দা দেশাপ্রিয়া। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এ খবর দিয়েছে দ্য হিন্দু।


শেয়ার করুন

0 facebook: