ফেরত নারীরা। ফাইল ফটো |
স্টাফ রিপোর্ট।। সৌদি আরবে নিয়োগকর্তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন ৬৪ জন নারী গৃহকর্মী। গতকাল (সোমবার) রাতে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। দেশটিতে থাকাকালীন নিজেদের নিয়োগকর্তাদের দ্বারা তারা নানাভাবে শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব নারীরা রিয়াদে বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘সেফ হোমে' আশ্রয় নিয়েছিলেন। তারা 'স্বেচ্ছায়' দেশে ফিরে যেতে চেয়েছিল, তাই তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে ফিরে নারী শ্রমিকদের সবারই নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধে কোনো না অভিযোগ করেছেন।’
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের সঙ্গে ২০১৫ সালে চুক্তির ভিত্তিতে সৌদি আরবে নারী গৃহকর্মী পাঠানো শুরু হয়। গত পাঁচ বছরে প্রায় দুই লাখ নারী গৃহকর্মী পাঠানো হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে।
এর আগে এক চুক্তির ভিত্তিতে ২০১১ সালে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে গৃহকর্মী নিয়োগের কথা থাকলেও ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে দেশটিতে কর্মরত ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার ১৫০ জন গৃহকর্মীর সাক্ষাৎকারে ‘শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের’ তথ্য উঠে এলে কোনো নারী আর দেশটিতে কাজ করতে যাননি।
এদিকে, বিদেশে যাওয়ার সময় সাধারণ জনগণ যেন প্রতারিত না হয়, সেজন্য নজরদারি জোরদারের পাশাপাশি ব্যাপক প্রচার চালাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি ২০১৬-এর আলোকে গঠিত অভিবাসনবিষয়ক জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতারণা বন্ধে আমাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে। কেননা, তারা আমাদের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলতে রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে ব্যাপক ভূমিকা রাখছেন।’
তিনি বলেন, তারা যেন অকালে হারিয়ে না যায়, সেজন্য তাদের প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। কেননা, তাদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের দিকে নজর দেয়া আমাদের দায়িত্ব, যেহেতু তারা আমাদের দেশেরই নাগরিক।
বর্তমানে প্রায় ১ কোটি বাংলাদেশি বিশ্বের প্রায় ১০০টি দেশে অবস্থান করে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি আমাদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।’
যারা কাজের জন্য বিদেশ যাচ্ছে তাদের জীবনবৃত্তান্তসহ একটি ডাটাবেজ প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
যারা কাজের জন্য বিদেশে যাচ্ছে তাদের প্রশিক্ষণ এবং সে দেশের ভাষার ওপর দখল থাকার বিষয়ে গুরত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে আমরা যৌথভাবে প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে পারি, যেমনটি অতীতেও করা হয়েছে।’
খবর বিভাগঃ
জাতীয়
মুসলিম নির্যাতন
0 facebook: