স্টাফ
রিপোর্টার॥ বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা
মিন্নিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাকে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা
এলাকার নিজ বাসা থেকে জেলা পুলিশ লাইনে নেয়া হয়। এরপর ঐ দিন রাতে তড়িঘড়ি করে তাকে
গ্রেফতার দেখানো হয়।
একদিকে
নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়ে হত্যা করা হয়েছে। অন্যদিক হঠাৎ নিজের স্বামী হত্যার
দায়ে মামলার প্রধান স্বাক্ষী স্ত্রী মিন্নি গ্রেফতার কেন?
তাহলে
কি মুল হোতাদেরকে বাচিয়ে রাখতে এই কারসাজি?
অনুসন্ধানে
জানা গেছে, ০০৭
বন্ড বাহিনীর মূল হোতা স্থানীয় আওয়ামী এমপি পুত্র এ্যাড. সুনাম দেবনাথ। তার প্রশ্রয়েই বরগুনার সাব্বির
পরিনত হয়ে ওঠে ভয়ংকর সন্ত্রাসী নয়ন বন্ডে। জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান তিন আসামির দুজন
রিফাত ফরাজী ও তাঁর ভাই রিশান ফরাজী বরগুনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের
আপন ভায়রার ছেলে। আরেক আসামি সাব্বির জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক
সুনাম দেবনাথের ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত। সুনাম দেবনাথ বরগুনা সদর আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্র
দেবনাথ শম্ভুর পুত্র।”
অনুসন্ধান
বলছে, এই
এমপিপুত্রেরই রিফাতের বাবাকে নিজের পুত্রবধু মিন্নিকে খুনের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ
তুলে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য করে। এমনকি নিজেই খুনিদের বাঁচাতে মিন্নিকে গ্রেফতারের
দাবিতে গত ৩০ জুন রবিবার বরগুনা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে এই এমপিপুত্র। ঐদিন
বক্তব্যে মিন্নিকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সন্ত্রাসী সুনাম। এমপি পুত্র পলাতক
আসামীদের গ্রেফতার বা গ্রেফতারকৃতদের শাস্তি না চেয়ে বরং তাদের সাফাই গাওয়ায় ব্যাপক
সমলোচনার জন্ম নেয়।
এদিকে
রিফাত শরীফ হত্যার প্রধান ঘাতক নয়ন বন্ডকে ক্রসফায়ারের পর আজ নিশান ফরাজীকে গ্রেফতার
করেছে পুলিশ। জানা যায়,
ক্ষমতাসীন দলের একাংশের ছত্রছায়ায় মাদক ব্যবসা থেকে শুরু করে সব
ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেও পার পেয়ে যেত নয়ন বন্ড, রিফাত
ফরাজী আর তাদের বাহিনীর সদস্যরা। এ নিয়ে দলের অভ্যন্তরেও ছিল ক্ষোভ আর অসন্তোষ।
অন্যদিকে, রিফাত
খুনের আগের দিন নয়ন বন্ডের বাসায় মিন্নি গিয়েছিলেন বলে মিডিয়াতে নয়ন বন্ডের মায়ের বক্তব্য
প্রকাশিত হয়েছে। এই বক্তব্যও নয়ন বন্ডের মাকে দিতে বাধ্য করে এই এমপি পুত্র। এই বক্তব্যের
জবাব দিয়েছেন মিন্নি। তিনি বলেন,
২৫ জুন দুপুরে রিফাতের ফুফাতো বোন হ্যাপির চরকলমীর এলাকার বাসায়
রিফাতের পুরো পরিবার গিয়েছিল। মিন্নিও তাদের সঙ্গেই ছিলেন।
স্থানীয়রা
বলছেন, মিন্নিকে
গ্রেফতার করে ঘটণা অন্য খাতে প্রবাহিত করতে চায় ক্ষমতাসীনরা। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, কাদের
ভয়ে মিন্নির পক্ষে ছিল না কোনো আইনজীবী? তাহলে কি প্রধান স্বাক্ষী মিন্নি আটক নাটকের
মাধ্যমে ০০৭ বন্ড গ্রুপ ও স্থানীয় এমপি পুত্রকে বাঁচাতে চাইছে প্রশাসন?
খবর বিভাগঃ
অপরাধ
বরিশাল বিভাগ
0 facebook: